সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাহমুদ জুবায়ের নামে এক যুবককে বেধড়ক মারধরের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আহত মাহমুদ জুবায়ের উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের তফুর মিয়ার ছেলে। বুধবার সন্ধ্যায় আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন সড়কে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাহমুদ জুবায়ের তার নিজ ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের আলী মুর্তজা অরফে রাজাহাস-এর ছোট ছেলে তার ভগ্নিপতি হওয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দক্ষিণকূল গ্রামের বাবুল মেম্বারের ভাগনা হিরন ও ইসমাইল মেম্বারের ভাতিজা শিমুল আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন সড়কে একা পেয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে আহত করেছে। তাদের কাছে জান ভিক্ষা চেয়েও তিনি রক্ষা পাননি। এমন কি তাকে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগটুকুও দিচ্ছে না সন্ত্রাসীরা। তাদের ভয়ে কোনো গাড়ির ড্রাইভারকে ফোন করলেও আসছে না। নিজ ঘরে অবরুদ্ধ হয়ে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করছেন এবং চিকিৎসায় যেতে ফেসবুকে সাহায্য কামনা করেন তিনি। পরে আহতের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ঘটনাটি। একপর্যায়ে বিষয়টি তাহিরপুর থানা পুলিশের নজরে আসলে রাত ১২টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় তিনি বিশ্বম্ভরপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আহত মাহমুদ জুবায়ের বলেন, উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের আলী মর্তুজার ছোট ছেলের কাছে আমার ছোট বোন বিয়ে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণকুল গ্রামের বাবুল মেম্বার ও আনোয়ারপুর গ্রামের ইসমাইল মেম্বারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জের ধরে বুধবার সন্ধ্যায় বাবুল মেম্বারের ভাগ্নে হিরন এবং ইসমাইল মেম্বারের ভাতিজা শিমুল আনোয়ারপুর সড়কে একা পেয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে আহত করে এবং আমার সঙ্গে ১২ হাজার টাকা ও একটি স্যামসাং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তিনি আরও বলেন, আহত হয়ে ঘরে অবরুদ্ধ থাকি তিন থেকে চার ঘণ্টা। অনেকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি কিন্তু কেউ তাদের ভয়ে এগিয়ে আসেননি। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফেসবুকে আমার আহতের ছবি পোস্ট করলে বিষয়টি থানা পুলিশের নজরে আসলে রাত ১২টার দিকে তাহিরপুর থানার এসআই নাজমুলের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে বিশ্বম্ভপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া বলেন, বাজারে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। গত বছর আনোয়ারপুর বাজারের জুবায়েরের ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা বের হয়ে আমাকে কুপিয়ে আহত করেছিল। এ ঘটনার পর থেকে তিনি সহ তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে চলে যান। এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তিনি এখন একটি নাটক সাজিয়েছেন। বালিজুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হোসাইন বলেন, আমি জরুরি কাজে ঢাকায় আসছি। এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। উভয় পক্ষকেই বলেছি- শান্ত থাকার জন্য এবং আহত জোবায়ের পরিবারকে বলেছি- তাকে চিকিৎসা করানোর জন্য। বিষয়টি ঢাকা থেকে এসে আমরা স্থানীয় ভাবে বসে দেখবো বলে উভয় পক্ষকেই জানিয়ে দিয়েছি। তাহিরপুর থানার ওসি তদন্ত মো. সুহেল আহমদ বলেন, ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক পুলিশের সহযোগিতায় তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য