করতোয়া নদীতীরে লাশের অপেক্ষায় পরিবার

পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৩৪ জনে দাঁড়াল।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে করতোয়ার পারে নিখোঁজদের অপেক্ষায় অবস্থান করছেন স্বজনেরা।

মৃতরা হলেন লক্ষী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শ্যামলী রানী (১৪), দীপঙ্কর (৩), পিয়ন্ত (২.৫), রূপালী ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী (৭০), জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), শোভা রানী (২৭), তারা রানী (২৫), সনেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), হাশেম আলী (৭০), বিলাস চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়শী, প্রিয়ন্তী (৮), ব্রজেন্দ্রনাথ (৫৫), সনেকা রানী (৬০)। তবে বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মহালয়া উপলক্ষে পাঁচপীর, বোদা, মাড়েয়া, ব্যাঙহারি এসব এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকায় করে বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। এ কারণে মাঝ নদীতে পৌঁছানোর পর যাত্রীর চাপে নৌকা ডুবে যায়। এ সময় কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বেশির ভাগ যাত্রীই এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

কৃষ্ণ চন্দ্র রায় ভাই ও ভাইপোর খোঁজে এসেছেন আউলিয়া ঘাটে। এ সময় তিনি জানান, বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজায় যোগ দিতে তার ভাই নরেশ ও ভাইপো সিন্টু বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি। এ ঘটনার খবরে কাল থেকেই এখানে অপেক্ষা করছি।

নাতির খোঁজে উপজেলার পাঁচপীর এলাকা থেকে এসেছেন বৃদ্ধ সুমল চন্দ্র। এ সময় তিনি বলেন, নাতির লাশটা পেলে অন্তত নিজেরা সৎকারের কাজটা করতে পারতাম।

মাড়েয়া ইউপি সচিব কামরুজ্জামান জানান, নদীর বিভিন্ন অংশে মরদেহ ভেসে উঠছে। স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে এনে রাখছে। সেখান থেকে মরদেহ স্বজনদের কাছে স্থানান্তর করা হবে।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সব মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সৎকারের জন্য পরিবারগুলোকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম বলেন, সোমবার সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে ডুবুরিদল এসেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস।