দিনভর বৃষ্টিতে সিলেটে দুর্ভোগ বেড়েছে



ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাব সারা দেশের মতো সিলেটেও পড়েছে। গতকাল ওআজ ভোর থেকে টানা বৃষ্টি রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। টানা বৃষ্টিতে সিলেটজুড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। সকালে প্রথমেই অফিস ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরে সারাদিনই বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষও দুর্ভোগ পোহাতে পোহাতে জরুরি কাজকর্ম সারেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলাবদ্ধতা বাড়ে। নগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়কেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। তবে বৃষ্টির কারণে অন্যদিনের তুলনায় রাস্তাঘাটে, বাজারে, শপিংমলে মানুষের যাতায়াত কম ছিল। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসার বাইনিম্ন আয়ের মানুষ বেশি দুর্ভোগে পড়েন। দিনভর বৃষ্টির কারণে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ ছাড়া ফুটপাথে ও ভাসমান হকারদেরও ব্যবসা সাজিয়ে বসতে দেখা যায়নি।জিতু মিয়ার পয়েন্ট বন্দর বাজার জিন্দাবাজার রিকাবীবিাজার আম্বরখানা চৌহাট্রা সহ আরও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার মানুষ বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে নানা রকম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকার ভাসমান সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন ভোর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে ভিজে ভোরবেলা পাইকারি বাজার থেকে সবজি সংগ্রহ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। বাজারেও কেউ যাচ্ছে না। তাই অল্প কিছু সবজি বিক্রি হয়েছে। বাকিটা রয়ে গেছে। সারাদিন ভিজে ভিজে ভ্যান নিয়ে অনেক এলাকায়ই গিয়েছি, কিন্তু ক্রেতাদের তেমন সাড়া নেই।বন্দর বাজার এলাকার রিকশাচালক জালাল বলেন, চার জনের সংসার। একদিন রিকশা চালালে একদিনের খাবার জোটে। সকালবেলা বের হয়েছি রেইনকোর্ট ছাড়া। ৯০ টাকার দুইটা ট্রিপ মারার পর ঠাণ্ডা লাগায় বাসায় ফিরে যাই। দুপুরে এখন আবার বের হয়েছি। বয়স হয়েছে তাই বৃষ্টিতে ভিজে বেশি সময় থাকতে পারি না। 

সামান্য বৃষ্টি হলেই অবস্থা বেহাল হয়ে যায়। আর দিনভর বৃষ্টি হলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। অন্যদিন অনেক ক্রেতা থাকে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য কোনো ক্রেতাই আসছে।বাজারে কাচামাল একদিনের বেশি রাখার সুযোগ নেই। 

শুধু ব্যবসায়ীরাই নন। অফিসগামী ও অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষেরও ভোগান্তি ছিল চরমে। একটি সরকারি অফিসে চাকরি করেন দ্রুব গৌতম তিনি বলেন, সকালে আসার সময় বাস পাইনি। বৃষ্টিতে ভিজে যাবো বলে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলে আসতে পারিনি। তাই একমাত্র ব্যবস্থা ছিল রিকশা বা সিএনজি। কিন্তু শতাধিক রিকশা-সিএনজিকে বলার পর কেউ রাজি হয় না। এখন আবার অফিস ছুটি হয়েছে। আধাঘণ্টা ধরে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুই পাইনি। কীভাবে যাবো ভেবে পাচ্ছি না। এখন আবার যাওয়ার চিন্তা। 

দিনভর বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকার অলিগলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এসব এলাকার মানুষের বাড়তি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে অনেকেই ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। ছাতা হাতে প্যান্ট গুটিয়ে বের হতে দেখা গেছে অনেককে। কেউ কেউ বাজার করতে বের হয়েছেন। কেউ আবার পেটের দায়ে অফিসে যেতে বের হয়েছেন। রাস্তায় খুব বেশি রিকশা দেখা যায়নি। যে কয়টি রিকশা দেখা গেছে তারা দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকাচ্ছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।