পাহাড়ে অভিযান শেষে সবকিছু বলব: আইজিপি

‘সুনামগঞ্জে জন্ম বলেই হয়তো আজ আমি আইজিপি’

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, 'পাহাড়ে কিছু বিশৃঙ্খলা-অস্থিরতা চলছে। আমাদের অভিযানও চলছে। এই মুহূর্তে কৌশলগত কারণে কিছু বলছি না। তবে অভিযান শেষ হলে সব কিছু জেনে যাবেন।'

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজ জেলা সুনামগঞ্জে প্রথমবারের মতো পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জঙ্গিবাদ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‌'সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাধারণ জনগণকে প্রধানমন্ত্রী একই প্ল্যাটফর্মে আনতে সক্ষম হয়েছেন। একযোগে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আছে।'

আইজিপি বলেন, 'বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী একটি পেশাদার বাহিনী। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্সের যে নীতি, সেই নীতির আলোকে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। সর্বশেষ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ হলি আর্টিজানের ঘটনার পর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এর আগে ছোটখাটো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তার মানে প্রধানমন্ত্রীর নীতির আলোকে আমরা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একই প্ল্যাটফর্মে একযোগে কাজ করছি।'

এর আগে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জেলা পুলিশ লাইনে নির্মিত ক্রিড়া কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। পরে তিনি জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

আইজিপি হওয়ার পর প্রথমবার নিজ জেলায় এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সুনামগঞ্জের হাওরের বাতাস ও সংগ্রাম নিয়ে আইজিপি বলেন, হাওরের বাতাস লাগলেই মনে হয় নিজের মায়ের কাছে এসেছি, মাটির কাছে এসেছি। সুনামগঞ্জের মানুষ সংগ্রামী, তাদের সঙ্গে আমি বড় হয়েছি। নিঃসন্দেহে এটা একটা অন্য রকম অনুভূতি। সুনামগঞ্জের মানুষ দেখলেই ভালো লাগে। যেহেতু এখানে বড় হয়েছি। আমি যত ক্ষুদ্রই হই অথবা বড়ই হই এই এলাকাকে অস্বীকার করতে পারব না। এই এলাকার জন্যই আমি আজ এখানে এসেছি।

চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কোনো জেলা সফরে আসলাম। এর আগে একবার অফিসিয়াল কাজে অন্য জেলায় গিয়েছি। আমি এই এলাকার সন্তান। এই এলাকার পানির সঙ্গে, মাটির সঙ্গে আমি বড় হয়েছি। ঢেউয়ের মাঝে সাঁতার শিখেছি। যখন ঝড় আসে, বৃষ্টি আসে, তখন আল্লাহর নাম জপেছি। সুনামগঞ্জের মানুষের দোয়ায় আইজিপি হয়েছি। সুনামগঞ্জে জন্ম বলেই হয়তো আজ আমি আইজিপি।

সুনামগঞ্জের পর্যটন নিয়ে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ পর্যটন এলাকা হলেও এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ নেই। ট্যুরিস্ট পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় আছে। সিলেটেও রয়েছে। সুনামগঞ্জেও ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমি আইজিপি থাকায় ট্যুরিস্ট পুলিশের একটা ইউনিট দেওয়া যায়।

আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন শুক্রবার সকালে হেলিকপ্টারযোগে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে অবতরণ করেন। পরে সেখানে তিনি একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও জেলা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভায় যোগ দেন। পরে তিনি সদর থানার পুলিশ সুপার শপিংমল উদ্বোধন করেন।

চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১৯৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তা। বিভিন্ন জেলার দায়িত্বের পাশাপাশি সিআইডি প্রধান ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান।