৪০ বছর সাজা হতে পারে ট্রাম্পের


কয়েকশ পৃষ্ঠার পুরো তদন্ত প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ করা হবে। সোমবার তদন্ত কমিটির ৭ ডেমোক্র্যাট ও ২ রিপাবলিকান সদস্য তাদের তদন্ত নিয়ে ১৬১ পৃষ্ঠার প্রাথমিক সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। তদন্ত কমিটির সদস্য মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি জেমি রাসকিন সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনার বিষয়ে বিচার বিভাগকে সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগগুলো হলো-বিদ্রোহে প্ররোচিত ও ইন্ধন দেওয়া, সরকারি কার্যক্রমে বাধা প্রদান, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করা ও মিথ্যা বক্তব্য দেওয়া। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারকাজ সম্পন্ন ও প্রমাণিত হলে অন্তত ৪০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে ট্রাম্পের।

ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন এ কমিটি সোমবার সর্বসম্মতিক্রমে ট্রাম্পকে বিচারের মুখোমুখি করতে মার্কিন বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ট্রাম্প কোনো ধরনের অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন; এক বিবৃতিতে তিনি কংগ্রেসনাল তদন্ত কমিটিকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

ক্যাপিটলে ওই দাঙ্গা নিয়ে প্রায় দেড় বছরের তদন্ত শেষে সোমবার শেষ বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সিলেক্ট কমিটি। সেখানেই তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আনার সুপারিশ করেন। হামলার ঘটনায় কংগ্রেসের পাশাপাশি বিচার বিভাগে পৃথক একটা তদন্ত চলমান রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর। এরপর ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসে। ওইদিনই ক্যাপিটল হিলে হামলা চালান ট্রাম্পের সমর্থকরা। এ হামলায় কয়েকজন প্রাণ হারান। আহত হন আরও অনেকে। জেমি রাসকিন বলেন, সুপারিশের জন্য প্রচুর প্রমাণ তাদের হাতে আছে।

বিচার বিভাগের কৌঁসুলিরা কংগ্রেসের এই সুপারিশ মেনে চলতে বাধ্য নন; এ সুপারিশ ছাড়াই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হবে কিনা, তারা তা খতিয়ে দেখছেন। কংগ্রেসনাল কমিটির এই সুপারিশ প্রতীকী হলেও এর চেয়ারম্যান তাদের প্রস্তাবকে ‘বিচারের রোডম্যাপ’ বলে অভিহিত করেছেন। কংগ্রেসের এ সুপারিশ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বিচার বিভাগের এক মুখপাত্র।

কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের এ কমিটির দাবি, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয় উলটে দিতে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মকর্তা, বিচার বিভাগ এমনকি নিজের ভাইস প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ট্রাম্প নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে যেসব অভিযোগ করেছিলেন, তা যে মিথ্যা, তা তিনি নিজেও জানতেন।

জো বাইডেনের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ঠেকাতে শেষ মুহূর্তের চেষ্টা হিসাবে ট্রাম্প কংগ্রেসে দাঙ্গা উসকে দেন বলেও অভিযোগ তাদের।

কংগ্রেসনাল এই কমিটি তদন্তকারীদের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় হোয়াইট হাউসের সাবেক কর্মকর্তা, ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভাঙ্কারও কঠোর সমালোচনা করেছে। কমিটি তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাককার্থিসহ চার রিপাবলিকানের নাম কংগ্রেসের এথিক্স কমিটিতে পাঠাবে বলেও জানিয়েছে।

গত মাসে যাত্রা শুরু করা ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনি শিবির এক বিবৃতিতে কংগ্রেসনাল কমিটির লোক দেখানো বিচারিক কার্যক্রমকে ‘দেশের ইতিহাসের কলঙ্ক’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। এই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ একটি অসার প্রকল্প ছাড়া আর কিছুই নয়, যা মার্কিনিদের বুদ্ধিমত্তাকে অপমান ও আমাদের গণতন্ত্রকে উপহাস করে, বলেছে তারা।।