ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য কয়েক বছর ধরেই অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল ঠেকাতে চেষ্টা করছে। গত বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ঘোষণা দেন, অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কঠোর আইন করবেন তিনি।
গত সোমবার সুনাকের সেই ঘোষণা অনুযায়ী দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত আইন পাস হয়। এরপর তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় রাজপ্রাসাদে। সেখানেও অনুমোদন পাওয়ার এখন এটি আইনে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের নতুন এ আইনটি অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য খারাপ বা দুঃসংবাদ হিসেবে ধরা হচ্ছে। কারণ এখন দেশটিতে কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌকা বা অন্য কোনো অবৈধ উপায়ে প্রবেশ করলে— কোনোভাবেই আশ্রয় পাবেন না। অবৈধভাবে প্রবেশ করার পর যদি কেউ ধরা পড়েন তাহলে সাথে সাথে তাকে তৃতীয় কোনো দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এছাড়া কেউ যদি একবার অবৈধ উপায়ে এসে ধরা পড়েন তাহলে তিনি আর কখনো যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আইনের মাধ্যমে অবৈধদের ধরা ও ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সরকারের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ফলে খুব ‘বিশেষ কোনো কারণ’ না থাকলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে বের করে দিতে সরকারি সংস্থাগুলো বাধ্য থাকবে।
এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো— সাগর পথের ছোট নৌকাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা বন্ধ করা। তবে আইনটির বিরোধীতা করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলছে, এটি যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার অঙ্গীকারের পরিপন্থি।
অবশ্য যুক্তরাজ্য নতুন আইনটি করার ক্ষেত্রে কিছু যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, শুধুমাত্র ২০২২ সালেই ৪৫ হাজার আশ্রয় প্রত্যাশী যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে এবং দিন দিন এটি বেড়ে যাচ্ছে।
সরকার আরও জানিয়েছে, এসব অভিবাসন প্রত্যাশীদের থাকার জন্য তাদের প্রতি বছর প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হচ্ছে। এছাড়া এসব অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীরা নৌকাতে চড়ার জন্য অপরাধী চক্রকে অর্থ প্রদান করছে। যার মাধ্যমে চক্রগুলো আর্থিকভাবে শক্তিশালী হচ্ছে।
ঋষি সুনাক প্রশাসন চাচ্ছে, অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় স্থানান্তর করতে। তবে এক্ষেত্রে আইনি বাধার মুখে পড়েছে তারা।
মন্তব্য