জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, দেশে এখন একজনের কথাই আইন। তিনি যা বলবেন, সেটাই আইনসিদ্ধ। কেউ ‘না’ বললে যেন শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলল। তাই একজনের সিদ্ধান্তই এখন রায়। এমন বাস্তবতায় আমরা পড়ে শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা ব

জিএম কাদের বলনে, এ থেকে বাঁচতে হলে গভর্নেন্স চেঞ্জ করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। রাজনীতি পরিবর্তন করতে না পারলে, কোনো কিছুই পরিবর্তন হবে না। ইদানিং বিদেশিদের খুব দুর্নাম করা হচ্ছে। 

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- বিদেশিরা খারাপ উদ্দেশ্যে গণতন্ত্র ও ভোটের কথা বলছে। এসব কথার কোনো অর্থ নেই। বিদেশিরা জনগণের পক্ষেই কথা বলছে, তারা ভালো কিছু চাচ্ছে। বিভিন্ন রোগের টিকা বিদেশিরা আমাদের দিয়েছে। আবার তারা টাকা পয়সা দিয়ে টিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নও করছে।

তিনি বলেন, করোনাকালে আমেরিকানরা ১০ কোটি টিকা ফ্রি দিয়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে, আমরা শুধু লুটপাট করব আর বিদেশিরা আমাদের দেশের লোকদের দেখবে। 

তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসার সঙ্গে একটি শক্তিশালী চক্র আছে। তারা বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে আছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে নেই বরং আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। প্রতিটি গ্রামে মাদক আছে, প্রতিটি পরিবারে মাদকসেবী আছে। অভিযোগ আছে, মাদক ব্যবসায় বিশাল অঙ্কের মুনাফা ক্ষমতাসীন দলের নেতা, পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভাগ হচ্ছে। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। 

জিএম কাদের বলেন, যারা অর্থের লোভে মাদক বিস্তারে সহায়তা করছে একদিন তাদের পরিবারই মাদকের ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাবে। লোভ লালসার রাজনীতির জন্যও দেশে মাদকের বিস্তার কমছে না। সিগারেটের নামে এখন গাঁজা বিক্রি হচ্ছে। ক্রসফায়ারের নামে দেশে বিনাবিচারে অনেক হত্যা করা হয়েছে কিন্তু মাদকের বিস্তার মোটেই কমেনি। 

তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশে এত অবহেলা হয় না। এখানেও অভিযোগ আছে সরকারি দল, পুলিশ-প্রশাসন একটি বড় অঙ্কের চাঁদা পায়। অনেক পরিবহণ মালিক বলেছেন ৫০০ টাকার টিকিট বিক্রি করতে হচ্ছে এক হাজার টাকায়। শুধু চাঁদা দিতেই এই বিশাল অঙ্কের টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। এরাই আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। 

জিএম কাদের বলেন, একটি কথা আছে- যে সমস্যার সমাধান নেই, তাকে সমস্যাই মনে করা হয় না। এখন প্রতিদিন সড়কে দুর্ঘটনা ঘটবে, মানুষ মারা যাবে। এটাই যেন স্বাভাবিক। এখন মানুষ প্রতিদিনের দুর্ঘটনাকে নিত্যদিনের ঘটনা মনে করছে। মানুষ মনে করে এটা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই।