বিএনপি নেতারাই জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক: তথ্যমন্ত্রী

বিদেশিদের পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি। তাছাড়া দলটির শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সব নেতাই জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহতিনি বলেন, বিএনপি লাখ লাখ ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছে, এতে তারা কিছু বিবৃতি আনতে পেরেছে। এখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে বিদেশিদের পেছনে ঘুরে কোনো লাভ হয়নি।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনায় সভায় যোগ দেন মন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। সেখানেই বক্তব্য দেওয়ার সময় এ মন্তব্য করেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। আরও উপস্থিত ছিলেন- দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আব্দুল জলিল ভুইয়া, আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, শফিকুল করিম সাবু, তরুণ তপন চক্রবর্ত্তী, কার্তিক চ্যাটার্জী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম রতন, মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।

হাছান মাহমুদ বলেন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ১৩ ‘জঙ্গি’ আটক হয়েছে। এটি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য, মানুষের দৃষ্টি সরাতে জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। যেমন চেয়ারম্যান তেমন মহাসচিব! যখন সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছিল, অনেক জঙ্গি আটক করছিল তখন খালেদা জিয়া বলেছিল- ‘কিছু মানুষকে জেলে দেওয়া হয়। কিছুদিন আটক রাখা হয়। তারপর যখন চুল দাড়ি লম্বা হয় তখন তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়।’ আর এখন ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, মানুষের দৃষ্টি ভিন্নদিকে নেওয়ার জন্য নাকি জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সব নেতা হচ্ছেন জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক।

তিনি আরও বলেন, যারা জঙ্গি সমর্থক, জঙ্গিদের লালন পালন করে, কোনো বিদেশি শক্তি তাদের সমর্থন করে না। আর আপনারা জানেন তারেক রহমানকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি। ভিসা না দেওয়ার জন্য এখান থেকে তারবার্তা পাঠানো হয়েছিল। এখানকার মার্কিন দূতাবাস থেকে স্টেট ডিপার্টমেন্টে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল তারেক রহমান একজন জঘন্য প্রকৃতির মানুষ, তাকে যেন ভিসা না দেওয়া হয়। সুতরাং সেই তারেক রহমান যখন সেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয় সেই দলকে কেউ সমর্থন করতে পারে না। কানাডার আদালত বিএনপিকে পরপর পাঁচবার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডিপার্টমেন্টও বিএনপিকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন নানামুখী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে; কিন্তু এ ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হয়নি। বিদেশিদের পেছনে ঘুরে কোনো লাভ হয়নি। তাই বিএনপি এখন ভিন্ন সুরে কথা বলছে। তারা লাখো ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকটা বিবৃতি দিয়েছিল। একেকটা বিবৃতির পেছনে কয়েক লাখ ডলার খরচ হয়েছে। 

যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ইতিহাসের একটি জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু হত্যার যে বিচারটি সংঘটিত হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ নয়, অসম্পূর্ণ বিচার। যে কয়জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে শুধুমাত্র তারাই যে এ ঘটনায় জড়িত- সেটা আমরা বিশ্বাস করি না। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছেন। আমরা তাদের সম্পের্কে জানতে চাই, তাদের দেখতে চাই, তাদের বুঝতে চাই এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাই। সেজন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি ছিল। সেই দাবি এখন প্রায় বাস্তবায়নের পথে। তাই দ্রুতবিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত যেন হয়, সেই প্রত্যাশা করি। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কবিদের কবি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু একটি চেতনার নাম, একটি আদর্শের নাম, একটি মানসিকতার নাম, একটি দেশপ্রেমের নাম।