চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করেছে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩। তবে এ অভিযান সফল করতে দেশটির বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি ১০টি সংস্থার অবদান রয়েছেবুধবার ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে। এর মধ্য দিয়ে চাঁদে মহাকাশযান অবতরণকারী দেশের তালিকায় যুক্ত হলো ভারত।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবর, দেশটির সরকারি-বেসরকারি ১০টি সংস্থা তিন বছর ধরে প্রযুক্তিগত দিক থেকে নানাভাবে সাহায্য করেছে তৃতীয় চন্দ্রযানকে। গত তিন বছরে ভালো আয়ের মুখ দেখেছে এই ১০টি ব্যবসায়িক সংস্থা।
সংস্থাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হ্যাল), ভেল ও পরিকাঠামো নির্মাণশিল্পে ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম অগ্রণী সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুবরো (এলঅ্যান্ডটি)।
এছাড়া রয়েছে মিশ্র ধাতু নিগম লিমিটেড, ওয়ালচাঁদনগর ইন্ডাস্ট্রি, সেন্টাম ইলেকট্রনিকস, লিন্ডে ইন্ডিয়া, পরশ ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস টেকনোলজির মতো সংস্থা।
এ তালিকায় আরও রয়েছে এমটিএআর টেকনোলজিস ও গোদরেজ অ্যারোস্পেস সংস্থাও। ব্যবসায়িক সংস্থা গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজেরই একটি শাখা গোদরেজ অ্যারোস্পেস।
ইসরোর একটি সূত্রের বরাতে জানানো হয়েছে, চন্দ্রযানের গতিবর্ধক যন্ত্রপাতির জোগান দিয়েছে এলঅ্যান্ডটি সংস্থা। মূলত হেড অ্যান্ড সেগমেন্ট, মিডল সেগমেন্ট এবং নজেল বাকেট ফ্লাঙ্গ পোয়াইয়ের কারখানায় পরীক্ষা করে দেখার পর তা তুলে দেওয়া হয়েছে ইসরোর হাতে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভেল চন্দ্রযানের অত্যাধুনিক ব্যাটারির জোগান দিয়েছে। ভেলের গবেষণা সংক্রান্ত শাখা ওয়েল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট দুটি ধাতু দিয়ে নির্মিত বিশেষ অ্যাডাপটারের জোগান দিয়েছে। ফলে অতি শীতল আবহাওয়াতেও চন্দ্রযানের জ্বালানি জমাট বাঁধেনি।
চন্দ্রযানকে যে রকেটটির মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল, সেটি একাধিক মিশ্র ধাতুর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এ বিষয়ে সাহায্য করেছে মিশ্র ধাতু নিগম লিমিটেড।
এছাড়া হ্যাল চন্দ্রযানের একাধিক ছোট-বড় যন্ত্রপাতির জোগান দিয়েছে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেডের পক্ষে হ্যাল এবং এলঅ্যান্টটি যৌথভাবে পাঁচটি স্যাটেলাইট তৈরির বরাত পেয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ওয়ালচাঁদনগর ইন্ডাস্ট্রিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে চন্দ্রযানকে সহায়তা জুগিয়েছে। অত্যধিক চাপেও যাতে জ্বালানিভর্তি ট্যাঙ্কিতে কোনো সমস্যা দেখা না দেয়, তার জন্যই বিশেষ প্রযুক্তিগত সাহায্য জুগিয়েছে এ সংস্থা।
ইসরোর তৃতীয় চন্দ্র অভিযানে মোট খরচ হয়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু সফলভাবে উৎক্ষেপণ করতেই খরচ হয়েছে ৩৬৫ কোটি টাকা। ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের জন্য খরচ হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা।
চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের জন্য বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদি বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের আগামী প্রজন্ম চাঁদে পর্যটনের স্বপ্ন দেখবে। দূরের চাঁদমামা ‘ট্যুরের’ চাঁদমামা হবে।।
মন্তব্য