বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সারা বিশ্বের মানুষ স্বৈরাচারদের শত্রু, স্বৈরাচাররা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে এর চেয়ে আরও খারাপ হচ্ছে গণতন্ত্রের ভান ধরে স্বৈরাচারী করাশনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক কণ্ঠ বাংলাদেশ আয়োজিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রয়োগে নাগরিক সমাজের ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, সরকার বিদেশে ও মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু বিপদজনক হচ্ছে তারা মুখে বলে গণতন্ত্র আর যা করে তা পুরোটাই উলটো। সেটাই বাংলাদেশে হচ্ছে। বিগত ১৪ বছর ধরে সারা বিশ্বে দেশকে গণতন্ত্রকামী বলে প্রচার করে যে ফানুস উড়িয়েছে তা এখন ফুটো হয়ে গেছে। এখন দেশ ও সারা বিশ্বে এটা প্রচার হয়ে গেছে, বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। সেজন্য বিশ্ব আজ হস্তক্ষেপ করছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্র দিয়ে। এটি যদি না থাকে তাহলে বাংলাদশের মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্রগঠন সবকিছু অর্থহীন হয়ে যাবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাকশাল কায়েম করা হয়েআমাদের আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন জানিয়ে মঈন খান বলেন, এটি শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। এটা শুধু আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়, একটু সুষ্ঠু ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে একটি সরকার গঠনের আন্দোলন। তারা ১৭৩ দিন হরতাল করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আবেদন করেছে। সেদিন তারা বলেছে এছাড়া শুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তবে এখন কেন তারা সেটায় রাজি হয় না।
বিএনপি মানুষের জন্য আন্দোলন করে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রাজি হইনি, কারণ পৃথিবীতে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এটা ছিল না। তবে এ নিয়ে আন্দোলন হয়েছে দেশে। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মানুষের কথা বুঝতে পেরেছিলেন যে, দেশের মানুষ একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করে। তিনি তখন তা মেনে নিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে ২০০ এর অধিক দেশ রয়েছে। গণতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক কিংবা স্বৈরাচার। তবে কোনো দেশে দেখাতে পারবেন না কোনো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা হয়। আর ৪৫ লাখ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এ দেশে তাই হচ্ছে।
‘অস্ত্র, লগি-বৈঠা দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করা যায়, তবে এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের মন জয় করতে পারবে না, পারেনি। সরকার বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। তবে এর মাধ্যমে তারা কোনোদিন মানুষের মন জয় করতে পারবে না। এ সরকার প্রচার করে দেশে মেগা উন্নয়ন হয়েছে। তবে এর মাধ্যমে দেশে মেগা দুর্নীতি করেছে সরকার। ’
বিএনপি উদার নীতির দল উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে আমরা এটি ফিরিয়ে আনবো গণতান্ত্রিক উপায়ে। আমরা লগি বৈঠার রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। এ সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিক, সেটাই চাই। সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে মানুষের চাওয়ার দিকে তাকান। স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দিন। এতে লজ্জার কিছু নেই।
নাগরিক কণ্ঠের আহবায়ক মো. রমিজ খানের সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য