কেন বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে, প্রশ্ন রিজভীর

বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগের বিষয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী পালটা প্রশ্ন ছুড়েতিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ তাদের দলীয় নেতারা বলছেন বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করতে। আমাদের ওপর কেন ভিসানীতি প্রয়োগ হবে? আমরা কি কাউকে গুলি করে হত্যা করেছি, আমরা কি ক্ষমতায় জোর করে টিকে থাকতে মানুষের চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছি? আমরা পুলিশ দিয়ে ভোটের অধিকারের কথা বলার জন্য দমন-পীড়ন চালাইনি, আমরা আদলতকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নগ্ন হস্তক্ষেপ করিনি। তাহলে কেন বিএনপির ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে?’

রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটুকে আর্থিক সহায়তা প্রদান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ফতুল্লার কতুবপুরের নয়ামাটি এলাকায় বিএনপির এক দফা আন্দোলনে ‘পুলিশের গুলিতে’ এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন টিটু। 

সহায়তা প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাহামুদুর রহমান সুমন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত, তাই উন্নত চিকিৎসা নিতে বিদেশ গিয়েছেন বলে দাবি করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে কেউ যোগসূত্র পেল না, জনগর পেল না কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠিকই যোগসূত্র পেয়ে যান। কারণ তারা মিথ্যাচারের রাজনীতি করেন এবং সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই বিভ্রান্তি ছড়ান।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রায় দেড় থেকে দুই মাস যাবৎ অসুস্থ। তিনি সস্ত্রীক গুরুতর অসুস্থ এবং বহুদিন যাবৎ চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া মির্জা আব্বাসও জটিল রোগে চিকিৎসাধীন। এখানে বিদেশিদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে আন্দোলন চালানোর যোগসূত্র জনগণ পেলেন না কিন্তু ওবায়দুল কাদের পেলেন। তারা জনগণের কাছে মিথ্যাচার করে যে অপকর্ম করতে চায় এটাই তার প্রমাণ। তিনি বিভিন্ন মিথ্যাচার করে আওয়ামী লীগকে সার্কাসের জোকারে পরিণত করেছেন।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো দিনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলেই জ্বর আসে। তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা ও অঙ্গহানি করছে। নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা তার হাতে থাকা তাস নিয়ে খেলায় মাতেন। তিনি কখনো জঙ্গিবাদের নাটক মঞ্চায়ন করেন, আবার কখনো আগুন সন্ত্রাসের কথা বলেন। আদালতকে পর্যন্ত বিএনপিকে দমন করতে ব্যবহার করেন। তিনি তার পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাবকে দিয়ে বিরোধী দলকে দমন করতে চান।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা এক দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে ভোটের অধিকার ও ভাতের অধিকারের কথা বলায় এই নারায়ণগঞ্জের শাওনকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। টিটুর মতো ত্যাগী নেতাকে গুলি করে চোখের দৃষ্টি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আজকে বিভিন্ন শ্রমজীবী ও পেশাজীবীদের কাছে জানতে চাইলেও তারা বলবে এগুলো এই সরকারের তামাশা। এগুলো শুধু আমাদের কথা না, এগুলো তাদের নিজেদের লোকেদের কথা। কথায় আছে, সত্যকে কখনো চেপে রাখা যায় না।’