সামাজিক সিনেমার পরিচালক কামাল আহমেদের হাত ধরেই রূপালী পর্দায় কাজ শুরু করেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রেহানা জলি। রূপালী পর্দায় ১৯৮৫ সালে তার অভিষেক হয়। যদিও শুরুটা হয়েছিল নায়িকা হিসেবে ‘মা ও ছেলে’ সিনেমার মাধ্যমে। প্রথম সিনেমাতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু নায়িকা হিসেবে তার পথচলা খুব একটা দীর্ঘ ছিল না। অল্প সময়ে তিনি পর্দায় মায়ের চরিত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অবাক করার বিষয় হলো তিনি যে সকল নায়কদের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন পরবর্তীতে তাদের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই গুণী অভিনেত্রী অসুস্থতার কারণে বাসায় বন্দি। সম্প্রতি মানবজমিনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত কথা হয় তার। অসুস্থতার কারণে আপনি অভএই সময়ে আপনার সহকর্মী কিংবা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে কি? রেহানা জলি বলেন, কি হবে আর দুঃখের কাহিনী শুনে। শিল্পীদের জীবন সত্যি দুঃখে ভরা। বিশেষ করে যখন কোনো শিল্পী অসুস্থ হয় কিংবা বিপদে পড়ে ভুলেও তার সহকর্মীরা খোঁজখবর রাখে না। বিশেষ করে শিল্পী সমিতি কাদের কল্যাণে কাজ করে আমার প্রশ্ন আপনাদের কাছে। বর্তমানে এই কমিটিতে যারা বিভিন্ন পদে রয়েছেন তারা তো তাদের প্রমোশন নিয়েই ব্যস্ত। অনলাইনে তাদের উদ্ভট কর্মকাণ্ড সারা দেশের লোক দেখে। রেহানা জলি আরও বলেন, আমি যখন প্রথম অসুস্থ হই গুরুতর অবস্থা ছিল। সে সময় আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, নিজের পরিবারের সদস্য মনে করেছি তারা কেউই আমার খোঁজখবর নেয়নি। তবে দু’জন মানুষের কাছে আমি চির ঋণী। তারা হলেন পরিচালক জি এম সৈকত ও অভিনেত্রী শাহানুর। এই দু’জন আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে অনুদান দিয়েছিলেন। রেহানা জলি নিজের অসুস্থতার বিষয়ে বলেন, আজ আমি যে রোগের সঙ্গে বসবাস করছি তা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং ব্যয়বহুল। অনুদানের টাকায় চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে গিয়ে আজ আমি দিশাহারা। যখন কাজ করতাম আমার উপার্জন দিয়ে আমার পরিবারের ছোট ছোট ভাই বোনের দৈনন্দিন খরচ মেটাতাম। সে সময় অভিনয়কে ভালোবেসে শুধু কাজ করে গিয়েছি, কোনোদিনই আর্থিক বিষয়টি নজর দেইনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ, তিনি যদি আমাকে একটু মাথা গোঁজার জমি দিতেন, তাহলে শেষ বয়সটা শান্তিতে কাটাতে পারতাম।
মন্তব্য