রাজপথ দখলে দিনভর, রাজধানীতে আ.লীগের মিছিল-শোডাউন

বিএনপি-জামায়াতের তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন বুধবারও রাজপথে সরব ছিল আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ রাজধানীর প্রবেশপথ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড়, অলিগলিতে সকাল থেকে অবস্থান ছিল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব স্থানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও বাড়ে। অবরোধ প্রতিহত করতে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি মিছিল, সমাবেশও করে তারা। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল নিয়েও শোডাউন করতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের। এসব মিছিল-সমাবেশে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়েও উপস্থিত থাকতে দেবুধবার সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। সকাল ৯টার আগে থেকেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইফুন্নবী সাগরসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা গুলিস্তানে অবস্থান নিয়েছিলেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নেতাকর্মীদের সংখ্যাও। সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এদিন সকাল থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এদিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ মিছিল শেষে সমাবেশ করে। এতে নেতৃত্ব দেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজউদ্দিন আহমেদ, হাবিবুর রহমান পবন, মোয়াজ্জেম হোসেন, শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনুদ্দিন রানা, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করে স্বেচ্ছাসেবক লীগও। এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হক বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজাল রহমান বাবু, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারেক সাইদসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতাকর্মীরা। এছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেত্রীদেরও সকাল থেকে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় লাঠি ও হকিস্টিক হাতে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকা-৫ আসনের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিল, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। কর্মসূচিতে ঢাকা-৫ আসনের দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

সকাল ৯টা থেকে ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার জ্যেষ্ঠপুত্র ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজলের নির্দেশে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার, সারুলিয়া, সানারপাড়, কোনাপাড়া, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, শনিরআখড়া ও ধলপুরে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এদিন দুপুরে সজলের নেতৃত্বে অবরোধবিরোধী মোটরসাইকেলের শোডাউন দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক জগলুল কবিরের নেতৃত্বে শ্যামপুর ইকোপার্ক, ঢাকা ম্যাচ এলাকায় এ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডে ভোর থেকেই শান্তি সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, আদাবরসহ বেশকিছু স্থানে সমাবেশে অংশ নেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আজিজুল হক রানা, অধ্যক্ষ আব্দুস সত্তার, এমএ মান্নান প্রমুখ। সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি গাবতলীতে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশ, মিছিলসহ, পল্লবী, বাড্ডা, মিরপুরে বেশকিছু সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন এবং মিছিলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মিজানুর রহমান মিজান, মিজানুল ইসলাম মিজু, সাবিনা আক্তার তুহিন, গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ। 

দারুসসালাম-শাহআলীতে বিভিন্ন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আগা খান মিন্টু এমপি ও প্রফেসর এমএ হামিদ। কাফরুলে ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ-সদস্য মোহম্মদ কামাল আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মইজউদ্দিন, পরিচালনা করেন আমির উদ্দিন। সভায় নগর, থানা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, খিলক্ষেতে বিভিন্ন সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন নাজিম উদ্দিন আহমেদ, হাবিব হাসান এমপি, মতিউর রহমান মতি, খসরু চৌধুরী, রবিউল ইসলাম রবি, সালাউদ্দিন পিন্টু প্রমুখ। পল্লবী এলাকায় উপস্থিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম আমিন, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম, সরোয়ার আলম, কমিশনার আব্দুর রউফ নান্নু প্রমুখ।

লে. কর্নেল (অব.) কানিজ ফাতেমা ও খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয় কাঁঠালতলা ও ভাষানটেকে। রূপনগর থানার উদ্যোগে চলন্তিকা মোড়ে শান্তি সমাবেশে নেতৃত্ব দেন জাহাঙ্গীর আলম মজনু, সালাউদ্দিন রবিন, সোহেল প্রমুখ। তেজগাঁও এবং বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন জহিরুল হক জিল্লুু, শেখ আওয়াল, দেওয়ান আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। বাড্ডা, ভাটারা ও গুলশান-বনানী এলাকায় সমাবেশে নেতৃত্ব দেন কাদের খান, জাহাঙ্গীর আলম, ইসহাক মিয়া, শহীদ খন্দকার, বিল্লাল হোসেন প্রমুখ। এদিকে ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের উদ্যোগে দুপুর ১২টায় ঢাকা-১১ আসনে বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। অন্যদিকে ঢাকা-১৪ আসনে গাবতলী, বেড়িবাঁধে যুবলীগের অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।