দ. কোরিয়ায় বিরোধী দলীয় নেতাকে গলায় ছুরিকাঘাত

দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা লি জায়ে-মুং’কে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। দেশটির বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ বলছে, দক্ষিণের বন্দরনগরী বুসানে একটি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে। আজ মঙ্গলবার সকালে সেখানে তার গলার পিছন দিকে বামপাশে কোপানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে লি’র গলায় এক সেন্টিমিটার গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে তিনি সচেতন আছেন। 

উল্লেখ্য, দেশটিতে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। হামলাকারীর বয়স ৫০ বা ৬০-এর কোঠায়। সে লি’র কাছে অটোগ্রাফ নেয়ার ভান করে অগ্রসর হয়। এরপরই আকস্মিকভাবে ছুরিকাঘাত করে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, লোকজনের ওপর প্রথম পড়ে যান লি। তারপর নিচে পড়ে যান। হামলাকারীকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন কয়েকজন। ঘটনার পর ছবিতে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে আছেন লি। তার চোখ বন্ধ। কেউ একজন একটি রুমাল দিয়ে তার গলার ক্ষতস্থান বেঁধে দেয়ার চেষ্টা করছেন। এরপর তাকে একটি হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেয়া হয়। 

৫৯ বছর বয়সী লি দক্ষিণ কোরিয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টি অব কোরিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য নন। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে একটি আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই নির্বাচন এ বছর এপ্রিলে হওয়ার কথা। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইওলের চেয়ে শতকরা মাত্র ০.৭৩ ভাগ কম ভোট পেয়ে পরাজিত হন। দেশটির ইতিহাসে এটাই ছিল সবচেয়ে কম ভোটের ব্যবধান। ২০২৭ সালে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তখন তিনি আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। 

নির্বাচনের পর থেকেই তাকে দুর্নীতি এবং আস্থাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি যখন সিউলের দক্ষিণে ১০ লাখ মানুষের শহর সিওঙ্গনামের মেয়র ছিলেন, তখন একটি প্রোপার্টি প্রজেক্ট থেকে বেসরকারি ডেভেলপারদেরকে বেআইনি লাভের সুযোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ প্রসিকিউটরদের। তবে এ অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন লি। তাকে জেলে পাঠানোর জন্য সেপ্টেম্বরে আবেদন করা হয় প্রসিকিউশন থেকে। কিন্তু আদালত সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। কারণ, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার হয়নি এখনও। তিনি মেয়র থাকা অবস্থায় অনেক দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত করছে প্রকিসিউটররা। প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের পররাষ্ট্র ও আভ্যন্তরীণ নীতির বিরুদ্ধে তিন সপ্তাহ অনশন করেন লি। এতে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।