পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে নিয়ে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খতার অভিযোগ, নওয়াজ শরিফ ‘দুই আম্পায়ারের’ কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছেন। এমনকি সেই আম্পায়ারদের একজন সম্প্রতি নওয়াজের পক্ষে একটি ‘নো-বল’ও ডেকেছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ খবর দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ইমরান খানের তোশাখানা মামলার শুনানি হয়। এর পর আদালতের অনুমতিক্রমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইমরান খান। আলাপকালে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। তবে দুই আম্পায়ারের নাম উল্লেখ করেননি পিটিআই প্রধান।
সম্প্রতি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তান (পিটিআই) এর নির্বাচনে লড়া নিয়ে বেশ ঝামেলা করেছে। বিশেষ করে, পিটিআইয়ের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল, পরে আবার ফিরিয়ে নেওয়া এবং ইমরান খানের দলের নির্বাচনি প্রতীক ব্যাট বাতিল করার মতো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের বিচার বিভাগ নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে চলমান বেশ কয়েকটি মামলায় রায় ও জামিন নিয়ে নজিরবিহীন কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে। বিপরীতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে কারাগারে আদালত স্থাপন করে ইমরান খানের মামলার কার্যক্রমও চালানো হয়েছে।
ইমরান খান অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে যা ঘটছে তার সবকিছুই মূলত তার দল পাকিস্তান পিটিআইকে কোণঠাসা করে নওয়াজ শরিফ ও তার দলকে (পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ) বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্যই করা হচ্ছে। আর এসবই হচ্ছে তথাকথিত ‘লন্ডন পরিকল্পনার’ অংশ হিসেবে।
এর আগে গত বছরের মার্চ মাসে লাহোর পুলিশ ইমরান খানের বাড়িতে বিশাল বহর নিয়ে উপস্থিত হয়ে তল্লাশি-ভাঙচুর চালানোর পর ইমরান খান এই ‘লন্ডন পরিকল্পনা’র অভিযোগ করেন। তিনি সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছিলেন, ‘এটি মূলত লন্ডন পরিকল্পনার অংশ। যেখানে এক বৈঠকে পলাতক নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতায় আনার বিষয়ে কয়েকটি পক্ষ একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল।’
এদিন আদিয়ালা কারাগারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আশা প্রকাশ করে ইমরান খান বলেন, তার এবং তার দলের বিরুদ্ধে যে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের জনগণ এর পাল্টা জবাব দেবে। তিনি আরও বলেন, তার রাজনৈতিক সংগ্রাম এক দিনের নয়, দীর্ঘ ২৭ বছরের। জনগণের মধ্যে তার এবং তার দলের ব্যাপক সমর্থন আছে এবং আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি তা ভোটের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে।
মন্তব্য