আন্তর্জাতিক ডেস্ক :নিজের কাজের প্রশংসা শুনতে চান না— এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। তবে তাদের সবাই কিন্তু আবার যেচে প্রশংসা নিতে চান না। এ ক্ষেত্রে খানিকটা ব্যতিক্রম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের কাজের জন্য পর্যাপ্ত ইতিবাচক মন্তব্য না শুনতে পেরে গণমাধ্যমের প্রতি একাধিকবার মনোকষ্টের কথাও জানিয়েছেন তিনি। সেই ট্রাম্পই হয়তো এবার নিজের নামে দেওয়া সম্মাননা না পেলেই খুশি হতেন।
ঘটনা হলো— নতুন এক উভচর প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই প্রাণীর নামকরণ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নামের আদলে। প্রাণীটির নাম রাখা হয়েছে ‘দ্য ডারমোফিস ডোনাল্ডট্রাম্পি’। প্রাণীটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি বালিতে মাথা ঢুকিয়ে বসে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ার কারণেই মূলত প্রাণীটির নাম তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে।
ডারমোফিস ডোনাল্ডট্রাম্পি
ডারমোফিস ডোনাল্ডট্রাম্পি অন্ধ ও দেখতে ছোট। বেশিরভাগ সময় প্রাণীটি মাটির নিচেই থাকে। নতুন উভচর প্রাণীটির সন্ধান মিলেছে পানামায়। এক নিলামে ২৫ হাজার ডলার দাম নিয়ে এটি কিনে নিয়েছেন এনভাইরোবিল্ড নামের পরিবেশ বিষয়ক এক কোম্পানির মালিক। তিনিই প্রাণীটির নামকরণকারী।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চায়।
এনভাইরোবিল্ডের সহপ্রতিষ্ঠাতা আইডান বেল এক বিবৃতিতে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতা ডারমোফিস ডোনাল্ডট্রাম্পির কম। তাই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রণীত নামকাওয়াস্তে নীতিমালার ফলে প্রাণীটি বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্পের আচরণের সঙ্গে উভচরটির আচরণের এক অদ্ভুত মিল টানেন বেল। বলেন, ডোনাল্ডট্রাম্পি যেমন সবসময় মাটির নিচে মাথা ঢুকিয়ে রাখে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পও তেমনি মাথাটা লুকিয়েই রাখেন। সে কারণেই তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বৈজ্ঞানিক মত অস্বীকার করতে পারেন।
ট্রাম্প ও জলবায়ু পরিবর্তন
বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা একমত, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রধানত মানুষই দায়ী। কিন্তু ট্রাম্পের অভিযোগ, বিজ্ঞানীদের এমন মতের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে মানুষের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত অক্টোবরে সিবিএস’র অনুষ্ঠান ‘সিক্সটি মিনিটস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত নই এটি (জলবায়ু পরিবর্তন) মানবসৃষ্ট কিনা! আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারটি অস্বীকার করছি না। কিন্তু পৃথিবীর বাড়তে থাকা তাপমাত্রা আবার কমেও যেতে পারে।
গত মাসে ট্রাম্প তার নিজ প্রশাসনের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি প্রতিবেদন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি প্রতিবেদনটি নিয়ে বলেন, আমি এটা বিশ্বাস করি না।
এর আগে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেবেন।
মন্তব্য