আন্তর্জাতিক ডেস্ক:লক্ষ্য একটাই। আর তাই আলাদা আলাদা না লড়ে একসঙ্গে লড়াই চালানোই শ্রেয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলো। বিজেপিকে আসনচ্যুত করতে এবার একসময়কার প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সঙ্গেই জোট বাধতে চলেছে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা)।
উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির (সপা) প্রধান অখিলেশ যাদব শুক্রবার দিল্লিতে গিয়ে মায়াবতীর সঙ্গে মহাজোট নিয়ে কথা বলেছেন। বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়বেন বসপা-সপা। কংগ্রেসের ওপর দুই দলই বেশ হতাশ। তাই তাদের জোটে কংগ্রেসকে শামিল করবে না বলে জানা গিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসকে কার্যত বাদ দিয়েই উত্তরপ্রদেশে আসন রফা একরকম চূড়ান্ত করে ফেলল বসপা নেত্রী ও সপা প্রধান।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ছোট ছোট দল নিয়েই মহাজোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই দলনায়ক। ১৫ জানুয়ারির পরই আসন বণ্টন চূড়ান্ত করবেন তারা। দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনে রফা হয়েছে দুই দলের। বাকি আসন নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে রায়বেরেলি ও আমেঠিতে রাহুল গান্ধীর ঘাঁটি শক্ত বলে, ওই দু?টি আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে যে জোটে যাবেন না অখিলেশ, ইঙ্গিতটা মিলেছিল মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠনের পর। অখিলেশ চেয়েছিলেন, মধ্যপ্রদেশে তার দলের বিধায়ককে কোনো মন্ত্রিত্ব দেয়া হোক। কিন্তু তা করেনি কংগ্রেস। আর তাতেই ক্ষেপে যান অখিলেশ। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে জানান, মধ্যপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছতে তার দল যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে কংগ্রেসকে। কিন্তু তার পরেও কথা রাখেনি তারা। সপা-র বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে যে কংগ্রেস নিজের ক্ষতিই করল সেই ইঙ্গিতও দেন অখিলেশ। সেই সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের পথটা পরিষ্কার করে দিল কংগ্রেস।’
এদিকে, কেরালার শবরীমালা মন্দিরে দুই নারীর প্রবেশ সহিংসতা ও দাঙ্গার মধ্যেই তৃতীয় আরেক নারী ওই মন্দিরে ঢুকে প্রার্থনা করলেন।
শ্রীলংকার নাগরিক শশীকলা (৪৬) বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় ওই মন্দিরে ঢোকেন। পুলিশ বলছে, নিরাপত্তার কথা ভেবেই শশীকলা মন্দিরে ঢোকার কথা চেপে গেছেন। খবর এনডিটিভির। শ্রীলংকান এ নারী অবশ্য বলছেন, দেবতা আয়াপ্পার মূর্তি দর্শনে সব প্রাক প্রস্তুতি শেষে শবরীমালায় গেলেও মূল ফটকের নিচে ‘পবিত্র ১৮ ধাপ’ পার হওয়ার আগেই তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তৃতীয় এ নারীর শবরীমালায় প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করতে একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করেছে তারা। ভিডিওতে এক নারীকে মাথায় পূজার সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে ঢুকতে দেখা গেছে। কেরালার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শশীকলা নিয়ম মেনেই মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন।
মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিয়ে বিক্ষোভ ও সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেই শুক্রবার রাতে রাজ্যে ক্ষমতাসীন সিপিএম ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই সংসদ সদস্যের বাড়িতে বোমা হামলাও হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিন্নারাই বিজয়নের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে।
তিন দিনের ঘটনায় এরই মধ্যে আট শতাধিক মামলায় প্রায় দেড় হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার রাতে কান্নুর জেলার থালাসারি শহরে সিপিএম বিধায়ক এন শমসেরের বাড়িতে বোমা হামলা হয়। এ সময় শমসের বাড়ি ছিলেন না বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ঘটনার জন্য কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (আরএসএস) দায় দিয়েছেন এ বামনেতা। এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই একই শহরে বিজেপি সংসদ সদস্য ভি মুরালিধরনের পৈতৃক বাড়িতেও বোমা হামলা হয়। মুরালিধরন এ সময় বাড়িতে থাকলেও তার কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। চলমান এ সহিংসতায় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ১১০ জন। এছাড়া কান্নুর জেলায় সহিংসতা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। বুধবার থেকে চলমান সহিংসতায় এ নিয়ে গ্রেফতার হয়েছে প্রায় ১৮শ’ জন। তিন দিনে সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে ৮শ’টিরও বেশি মামলা করেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
মন্তব্য