আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ফ্রান্স জুড়ে আবারো সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে হাজার হাজার ‘ইয়োলো ভেস্ট’ বিক্ষোভকারী। গতকাল শনিবার রাজধানী প্যারিসসহ দেশটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজধানী প্যারিসে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জল কামান ও কাদানে গ্যাস ছুড়লে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। রাজধানী প্যারিসসহ গোটা দেশে টানা নবম সপ্তাহের মতো এই বিক্ষোভ চলছে।
গত শনিবার দেশজুড়ে প্রায় ৮৪ হাজার বিক্ষোভকারী মাঠে নামে। আনুষ্ঠানিক তথ্যের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, গেল সপ্তাহের তুলনায় গতকাল অনেক বেশি বিক্ষোভকারীকে রাস্তায় দেখা যায়। গত নভেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও আস্তে আস্তে বিক্ষোভকারীরে সংখ্যা বাড়তে থাকলে তালিকায় যুক্ত হয় জীবন যাপনের ব্যয় বৃদ্ধিসহ অন্যান্য অনেক চাহিদার। গতকাল অন্তত ২৪৪ জন ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। শুধু রাজধানী প্যারিসেই আটক করা হয়েছে ১৫৬ জনকে।
রাজধানী প্যারিসে হাজার হাজার নিরপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগেও বিক্ষোভের দিনগুলোতে রাস্তায় পুলিশসদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের সামাল দিতে প্যারিসের বিভিন্ন রাস্তা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় রায়ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের এমন আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আগামী ১৫ জানুয়ারি একটি জাতীয় বিতর্কের আয়োজন করা হবে। এই বিতর্কে ট্যাক্স, গ্রিন এনার্জি, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে। আর এই বিতর্ক একযোগে গোটা ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরের টাউন হলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ব্যাপক গণ-আন্দোলনের মুখে পড়েছে ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যক্রোঁর সরকার। ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনের চাপে পড়ে গত ১০ ডিসেম্বর জ্বালানি তেলের কর বৃদ্ধি বাতিল এবং অবসর ভাতা ও ওভারটাইমের আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে এরপরও আন্দোলন চলছে।
মন্তব্য