যুদ্ধাপরাধীর নাগরিকত্ব কেড়ে নিলো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:বলকান যুদ্ধে বেসামরিক লোকজন এবং কারাবন্দিদের হত্যা মামলায় দণ্ডিত বসনিয়া-হারজেগভিনা সেনা অফিসার স্যামি রাশেমা ইয়াটিসেন ওরফে রাশেমা হ্যান্ডানোভিচ ওরফে জোলজার (৪৬) মার্কিন নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে তাকে বসনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে ওরেগণের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জজ মারকো এ হারনান্দেজ এই যুদ্ধাপরাধীর নাগরিকত্ব বাতিলের রায় দেন। কারণ, তিনি সিটিজেনশিপ গ্রহণের সময় মিথ্যা তথ্য দেন। ফেডারেল কোর্টের মুখপাত্র গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার বিবরণে জান যায়, ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে বসনিয়া-হারজেগভিনার সেনা বাহিনী ত্রম্নসিনা গ্রামে হামলা চালিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের নির্বিচারে হত্যা করে। সভ্যবিশ্বে যেটি 'ত্রম্নসিনা হত্যাযজ্ঞ' হিসেবে পরিচিত। রাশেমা যুক্তরাষ্ট্রে এসে ২০০২ সালে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। সে সময় তিনি কখনোই উল্লেখ করেননি যে, তিনি কোন দেশের সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছেন কিংবা মানবাধিকার লংঘনের মত গুরুতর অপরাধে লিপ্ত ছিলেন। এ মামলা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট এটর্নি জেনারেল জিসে পেনোকিয়ো এক বিবৃতিতে বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীরা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী কিংবা বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে জড়িতদের সন্ধান করছে বিচার বিভাগ। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে যারা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধ এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।' যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে মানবাধিকার লংঘন এবং যুদ্ধাপরাধ সেন্টারের প্রধান মার্ক শ্যাফার বলেন, 'এই মামলাটি হচ্ছে সর্বশেষ একটি দৃষ্টান্ত- মানবাধিকার লংঘনকারী এবং যুদ্ধাপরাধ সেন্টারের চলমান কার্যক্রমের। আমরা আমাদের সবকিছু ব্যবহার করে, সম্ভাব্য সকল সহযোগির সাথে পরামর্শক্রমে বিদ্যমান আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের মত জঘন্য অপকর্মে লিপ্তদের খুঁজে বের করে বিচারে সোপর্দ করবোই'। নারী এবং প্রবীণসহ ২২ জনকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে সে দেশের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন রাশেমাসহ আরো কয়েকজন। তাদেরকে সাড়ে ৫ বছরের দণ্ড দেয়া হয় ২০১২ সালে। দণ্ড ভোগের পর রাশেমা যুক্তরাষ্ট্রে এসে ওরেগণে বসবাস করছিলেন। এই হত্থাযজ্ঞে জড়িত রাশেমার আরেক সহযোগী সেনা অফিসার এডিন ডিজেকোর বিরুদ্ধে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগ একই পদক্ষেপ নেয়। তাকেও নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে স্বদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।