খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জ শুনানি ১৮ মার্চ

নন্দিত ডেস্ক:গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। বুধবার পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালত এ দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জয়নাল আবেদিন মেজবাহ ও জিয়াউদ্দিন জিয়া। তারা চার্জ গঠনের আগে আদালতের কাছে সময় আবেদন করেন। আবেদনে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আগেরবার শুনানিতে আদালত মামলার আলামতসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদের দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এখনও সে সব নথি হাতে পাইনি। তাই আমরা শুনানি করতে পারছি না।আমাদের সময় দেয়া হোক। এ সময় বিচারক সময় আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৮ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এদিন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে ১টা ৫ মিনিটে তাকে আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সেদিন গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল। শুনানিতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াসহ মামলার সব আসামি পরস্পর যোগসাজশে গ্যাটকোকে অবৈভাবে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য অর্থ আত্মসাৎ করেন। এতে রাষ্ট্রের এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এটি প্রমাণ করার জন্য আমাদের কাছে যথেষ্ট আলামত ও সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা আশা করছি, আসামিদের শাস্তির আওতায় আনতে পারব। তাই খালেদাসহ সব আসামির বিরুদ্ধে দুদকের ৫-এর ২ ধারা ও দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারায় তাদের অভিযোগ গঠনের আবেদন করছি। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ গঠন শুনানি শেষে আসামিপক্ষের অভিযোগ গঠনের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হুইলচেয়ারে আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে বসা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিচারকের উদ্দেশে বলেছিলেন- আমাকে সাজা দিতে চাইলে দিয়ে দেন, আমি আর এ আদালতে আসব না। গত ১০ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেছিলেন একই আদালত। জরুরি অবস্থা জারির সময় করা এই মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিটের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্নআদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চআদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চআদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। আদালত সূত্র জানায়, দুদকের দেয়া চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিট আবেদনের কারণে প্রায় আট বছর নিম্নআদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চআদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চআদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন খালেদা জিয়া। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড কোম্পানিকে (গ্যাটকো) পাইয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ২০০৮ সালের ১৩ মে তদন্ত শেষে দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের মধ্যে ছয় আসামি মারা গেছেন। প্রসঙ্গত দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়ে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।