আস্থা ধরে রাখতে পারবে সুলতান’স ডাইন!

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চিতে ব্যবহৃত মাংস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এক ভোক্তা। এরপর থেকেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। অনেকে দাবি করেন, তাদের তৈরি কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের পরিবর্তে অন্য কোনো প্রাণীর মাংস ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সুলতান’স ডাইন বলছে, এসব অভিযোগ সত্য নয়।

অভিযোগের পর সোমবার (১৩ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কার্যালয়ে মাংস নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এই ঘটনায় সুলতান’স ডাইনের ওপর মানুষের আস্থা ধরে রাখতে পারবে কি না, জানতে চাইলে ব্যবসায়িক অংশীদার সাজিদ জামান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে খারাপ কাজটি হয়েছে। অনুমান ও গুজবের ওপর ভিত্তি করে আমাদের খাদ্যের মান নিয়ে অনেকেই ট্রল করেছেন। তাতে আমাদের ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের আস্থার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি গ্রাহকদের আস্থা পূর্বের ন্যায় থাকবে। কেননা কোনো ধরনের অভিযোগের প্রমাণ পায়নি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

তিনি বলেন, সুলতান’স ডাইনের ওপর গ্রাহকদের আস্থা শতভাগ তৈরি হওয়ায় একটি চক্র এমনটি ঘটিয়েছে। আশা করি গ্রাহকরাও বিষয়টি বুঝতে পারবে।

ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, তাদের সঙ্গে যা ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানটির সাময়িক সমস্যা হলেও পরে ঠিক হয়ে যাবে আমার বিশ্বাস। কেননা তাদের কাচ্চির প্রতি মানুষ অনেকটাই দুর্বল। আর যেহেতু প্রমাণ পাওয়া যায়নি এখন তেমন একটা প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।

এদিকে ‘অপপ্রচারের’ বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এর আগে বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরের পর থেকে ফেসবুকে সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানির মাংস নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। আর অভিযোগটি তুলেছেন কনক রহমান খান নামের এক ভোক্তা।

কনক রহমান খান স্ট্যাটাসে লেখেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি সুলতান’স ডাইন থেকে ৭টি কাচ্চি এনেছিলেন। খাবার সময় মাংসের হাড় দেখে সন্দেহ হয় তার। মাটন (খাসির মাংস) বলা হলেও তিনি অভিযোগ করে লেখেন, মাটনের হাড় এমন চিকন হয় না‌।

এরপর দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, এই ঘটনার পর সুলতান’স ডাইনের গুলশান ২ এর নম্বরে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করেন এটা কিসের মাংস ছিল? পরে তারা ২ জন লোকসহ আবার খাবার পাঠায়। ওনাদের এজিএম আশরাফও আসেন নতুন খাবারের সঙ্গে।

তিনি লেখেন, আগের প্যাকের খাবারের হাড়ের সঙ্গে এবারের মাংসের তুলনা করতে বললে এজিএম আশরাফ মানতেই নারাজ হয়ে বলেন, জেনেশুনে এমন মাংস দেয় না।

তারা বলে, তাদেরকে যে ভেন্ডর মাংস দেয়, তারা আসলে কোনো কিছু করতে পারে।

এরপর এজিএমকে প্রশ্ন করা হয়- তাহলে ভেন্ডরের কাছ থেকে মাংস নেওয়ার সময় কি আপনাদের মতো এত বড় ব্রান্ডের কোনো কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার নেই?

আপনি কি ২টা মাংস একই দেখতে পাচ্ছেন প্রশ্ন করলে ওনারা উল্টা প্রশ্ন করে তাহলে আপনারা কি দিয়ে মিটাতে চান? ইনডিরেক্টলি টাকা অফার করে এবং বলে আপনারা ঝামেলা করলে আমরাও জানি কি করতে হয়।

এরপর ৯৯৯ এ কল দেন ওই ভোক্তা। ৯৯৯ থেকে বলে বিএসটিআইয়ের নম্বরে অভিযোগ করতে।

এ বিষয়ে গুলশান-২ সুলতান’স ডাইন শাখার মার্কেটিং কমিউনিকেশন অফিসার ববি রানি দাস গণমাধ্যমকে জানান, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। সুলতান’স ডাইন অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। এক ক্রেতা বিড়ালের মাংসের বিরিয়ানির যে অভিযোগ করেছেন, তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পুরো অভিযোগটাই ভিত্তিহীন।

ওই ক্রেতার পরিচয় আমরা জানি না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে উনি খাবার নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর অভিযোগ করেন বলে জানান তিনি। ওই গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, এগুলো কিসের মাংস দিয়েছেন, বিড়ালের মাংসের বিরিয়ানি। আমরা বলেছি, এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।