স্বপ্নের ফেরিওয়ালা একজন গল্পকারের কথা: তাসলিমা খানম বীথি

নন্দিত সিলেট:আমাদের তিন বোনকে আব্বা সবসময় বলেন, কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। সত্য কথা বলবে, সৎ পথে চলবে। আর তুমি যে কাজটি করবে সেটি ভালোবেসে করবে। দুই হাতে কাজ করবে। কাজ করলে কখনও হাত ভেঙ্গে যাবে না। তোমার কাজই সফলতা এনে দেবে। তাই আমি যখনই কোন কাজ করি ভালোবেসে ও আন্তরিকতা সাথে করার চেষ্টা করি। আমার কর্মজীবনে যা কিছু অর্জন করেছি শিখেছি, জীবনে চলার পথে তা কখনো ভুলার নয়। যার অনুপ্রেরণা, উৎসাহ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি তাকে সবসময় দেখেছি মানুষের ভেতরে স্বপ্ন জাগাতে আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার পথ দেখিয়ে দিতে। তার কথামালা সোনালি রোদের মত চকচকে। জীবনে চলার পথে তার কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছি। হেরে যাবার জন্য তিনি স্বপ্ন দেখান না। স্বপ্ন তো আমার সঙ্গেই ছিল কিন্তু তাকে সম্পূর্ন করার রাস্তা অন্য কেউ দেখিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি হলেন একজন বাবা। ২. প্রতিটি সন্তানের অতি আপনজন-দুটি অক্ষরের একটি শব্দ ‘বাবা’। সন্তানের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং মধুর একটি শব্দ বাবা। জন্মদাতা পিতা। সন্তানের সুখ দুঃখে পাশে থাকেন বাবা; কষ্ট পেলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন বাবা। বাবাই হচ্ছেন প্রতিটি ছেলে-মেয়ের জীবন পথের পথ প্রদর্শক। একজন মেয়ের কাছে বাবা হচ্ছে একটি বটবৃক্ষ। যিনি সন্তানদের আগলে রাখেন গভীর মায়া-মমতায়। জীবনের সকল দুর্যোগ মুর্হুতে ঢাল হয়ে সামনে থাকেন বাবা-ই। বাবা-মা’র মমতার বাঁধনে থেকে সন্তানেরা অনেক অসাধ্য সাধনের স্বপ্ন দেখতে সাহস পায়। একজন আদর্শ মা’র আঁচলের ছায়াতলে যেমন একটি সন্তান আদর্শ সন্তান হয়ে গড়ে উঠতে পারে, তেমনি সন্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বাবার আদর্শই ছায়ার মতো অবস্থান করে সন্তানের পাশে। আমার কর্মময় জীবনে বাবার মত যে মানুষটির আদর্শ ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন তিনি হলেন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট সাংবাদিক সংগঠক ও গল্পকার সেলিম আউয়াল। তিনি শুধু আমার বস না একজন অভিভাবকও। কখনও ভেঙ্গে পরতে দেন না। প্রতিটি মুহূর্তে এগিয়ে চলার তাগিদ দেন। ৩.সেই শৈশব কৈশোর থেকেই কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাথে তার আত্মার সম্পর্ক। প্রতিটি বৃহস্পতিবার সাহিত্য আসরে তিনি থাকেন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। শহরে রাজপথের ল্যামপোষ্টের কিংবা কেমুসাসে প্রতিটি দরজা জানালা, লাইট, গেইট বন্ধ হয়ে গেলোও তখনও তিনি একা বসে থাকেন প্রিয় সাহিত্য আসর হল রুমে। সেই সময় তরুণ লেখকরা তার সাথে সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সাহিত্যেঙ্গনে কারো মৃত্যু শোক, কারো গ্রন্থ প্রকাশনা কিংবা কারো বিদায়ে সুহৃদ সম্মিলনে জন্য প্রথমে যে মানুষটি উদ্যোগ নেন তিনি হলেন সেলিম আউয়াল। পৃথিবীতে কারোর জন্য তো কিছু থেমে থাকে না। কাউকে না কাউকে ভালো কাজের জন্য তো এগিয়ে আসতেই হবে। পৃথিবী সমস্ত ভালো কাজগুলো জাগিয়ে তোলার প্রয়াস তার হৃদয়ে। যারা তাকে ভুল বুঝে দূরে সরে যায় একসময় তারাও ফিরে আসতে বাধ্য হন। ফিরে যে আসতেই হয়- তখন তিনি পরম মমতা তাদের পিটে হাত রাখেন। হেঁটে চলেন সামনের দিকে। তিনি মনে করেন আমরা সবসময় ভালো মানুষ গড়ে তোলার যদি চেষ্টা করি তবে দশ জনের মধ্যে তো ৮জন ভালো হবে। সেই ৮জনকে নিয়েই হবে আমাদের কাজ। ৪.তার লেখায় ফুটে ওঠে মানুষের স্বপ্নের কথা, মানুষের জীবনের কথা। যেমনটি তার গল্প ‘তাবিজওলা মাইয়া’’র বাবার সাথে আমার আব্বার কোথায় যেন একটি মিল খুঁজে পাই। যে গল্পটিকে কেন্দ্র করে বইয়ের নামকরন করা হয়। কেন জানি নামটি পড়লেই মন খারাপ হয়ে যেতো। কেন এই নামটি দেওয়া হল। মনের ভেতরে হাজারো প্রশ্ন ছিলো? একদিন লেখককে কাছে জিজ্ঞাসা করি? জবাবে তিনি বলেছিলেন, তাবিজওলার প্রথম সন্তান। প্রথম সন্তান দেখার তার খুব ইচ্ছা। কিন্তু পয়সা না থাকায় সে তার সন্তানকে দেখতে যেতে পারছে না। ফলে তার হৃদয়টি যেন নদীর মতো শুকিয়ে গিয়েছিলো। এরপর যখন মেয়ের কান্নার সুর শুনলো, তখন সে এতো তৃপ্তি পেলো যে তার মনে হলো তার যে হৃদয়টি এতোদিন শুকিয়ে মরা গাঙের মতো হয়ে গিয়েছিলো, সেই মরা গাঙে যেন আবার জল আসলো। নদীর মতো সে সজীব প্রাণবন্ত এবং তৃপ্ত হলো। লেখকের জবাব পেয়ে নিজের অজান্তে চোখের জল গড়িয়ে পড়েছিল সেদিন। কেন জানেন? কারন মরা গাঙে কোন একদিন জল আসে। কিন্তু যে পরিবারে কখনও জল আসে না, সেই পরিবার তো মরা গাঙ-ই তাই না! আমাদের পরিবার হল সেই ‘মরা গাঙ’। যে গাঙে কখনও জল আসার সম্ভাবনা নেই। আর সেই তাবিজওলা হচ্ছেন আমার আব্বা। ‘মরা গাঙে জল’ গ্রন্থে যে গল্পটি আমাকে সবচেয়ে বেশি র্স্পশ করেছে ‘রিং’। একমাত্র মেয়ে রীমা এসএসসিতে প্রথম বিভাগে পেয়ে বাবার মুখ উজ্জ্বল করে আনন্দ দিয়ে বায়না করেছিলো কানের একজড়ো সোনার রিং পরা। সংসারের সে টানাপোড়েন সোনার রিং কেনার সামর্থ না থাকলেও বাবার হার্টের ৪টি ভালব ব্লক থাকার সত্ত্বেও নিজের কথা না ভেবেও হার্টের রিং লাগানোর জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে একজোড়া কানের রিং দিয়ে মেয়ের সেই বায়না পূরণ করে দিয়েছিলেন বাবা। শৈশবে ঘন্টার পর ঘন্টা বাবার গালে গাল লাগিয়ে রাখতো যে মেয়েটি। সেই দিনগুলো ছিলো বাবার সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে আনন্দের। কানের রিং পরার পর মেয়েটির যে আনন্দময় মুখ দেখেছিলো বাবা এরকম আনন্দময় এমন মায়ামত মুখ কোনদিন দেখেননি। কানে সোনার রিং পরা মেয়ের আনন্দমুখ বাবাকে যে আনন্দ দিয়েছে, হার্টে রিং লাগিয়ে বুক ভরিয়া নিঃশ^াস নিয়েও সেই আনন্দ পেতেন না। মেয়ের প্রতি বাবার বিশাল হৃদয়ের ভালোবাসা চৎমকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। তা সত্যিকারে অর্থে যে কোন পাঠকের মনে দাগ কাটবেই। ৫. ১৯৬৪-এর ১০ জানুয়ারী সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরিপুর ইউনিয়নের খূজগীপুর মোল্লাবাড়ি গ্রামে গল্পকার সেলিম আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। ভোর না হতেই ঘুম ভাঙ্গে আজ। বাইরে বেরিয়ে দেখি কুয়াশা মোড়া, একটি অপরুপ রঙ্গিন দিন। এরকম একটি দিনে স্বর্গের পথ ভুলে মর্তে নেমে এসেছিলেন যে মানুষটি তিনি হলেন সৃজনশীল কবি গল্পকার, সাংবাদিক সংগঠক সেলিম আউয়াল। গত ১০ জানুয়ারি ২০১৭ তার ৫৪ তম জন্মদিন ছিলো। প্রতি বছরে এই দিনটিতে তিনি চান নতুন একটি গ্রন্থ বের করতে কিন্তু সেটি তিনি সফল হতে পারছেন না কিছুটা তার অসুস্থতার জন্য। কিন্তু এবার তিনি সফল হয়েছেন আর তার সেই ইচ্ছেটি পূরণ করতে কৈতর সিলেট আয়োজন করে তার গ্রন্থ প্রকাশনা উৎসব। মঙ্গলবার সন্ধ্যয় পৌনে ৬টায় গল্পকার সেলিম আউয়ালের ৭ম গ্রন্থ ‘গানের পাখি হাসন রাজা এবং তার পুত্র দৌহিত্র প্রপৌত্র কথা’ প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়। পৃথিবীতে যত ফুল ফুটে তা এক সময় ঝড়ে যায়, শুকিয়ে যায়। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না। তেমনি কোন লেখকের প্রতি পাঠকের ভালোবাসাও হারিয়ে যায় না। তাই প্রত্যেক লেখকের জন্মদিনে ফুল না দিয়ে যদি কেউ লেখকের একটি বই কিনবেন সেটাই হবে একজন লেখকের পরম আনন্দ। কারন একটি বই ক্রয় করলে একজন লেখক অনুপ্রাণিত হয়। তাই লেখককে প্রতি ফুলের তোড়া না দিয়ে তার একটি গ্রন্থ ক্রয় করবেন দেখবেন তাতে পাঠক আর লেখকের ভালোবাসা আরো গভীর হবে। ৬. ‘বত্রিশ বছর পর…চুরাশি সাল, তখন ¯œাতক পড়ছি। রেড়িও-তে তরুণদের অনুষ্ঠান ‘নব কল্লোল’এর প্রায় নিয়মিত কথিকা পড়ি। গ্রাম উন্নয়নে তরুণ সমাজ, দার্শনিক রুশো, আত্মস¤্র¢ম-এই ধরনের বিষয় নিয়ে কথিকা। একদিনের বিষয় ছিলো মরমি কবি হাসন রাজা। লোকে বলে, বলেরে ঘরবাড়ি বালা নায় আমারৃ’ রেড়িও তো এই গানটি শুনেই হাসন রাজার সাথে পরিচয়। তারপর হাসন রাজার জীবন নিয়ে বিচিত্র সব কাহিনী শোনা। কিন্তু কথিকার উপযোগি তথ্য ছিল না। আমার অবশ্য সমস্যা ছিলো না, কারণ আমার আছে মুসলিম সাহিত্য সংসদ। বইয়ের পাহাড়সম তার পাঠাগার। বাসায় বই নিয়ে পড়া যায়। এজন্যে যে কোন ধরনের কথিকা লেখতে তথ্য উপাত্তের নেই ঘাটতি। এইভাবে কয়েকটি বই মিলিয়ে লিখে ফেলি মরমি কবি হাসন রাজা। লেখাটিতে হাসন রাজার অনেকগুলো গানের উদ্ধৃতি দিই। তখন কিন্তু প্রচুর লোকজন রেডিও শুনতো। কথিকাটি প্রচারের পর অনেকের প্রশংসা বেশ ভালো লাগে। সেই ছিলো আমার হাসন রাজা চর্চা। তারপর বত্রিশটি বছর কেটে গেলো’… বত্রিশ বছর আগের একথাগুলো হচ্ছে ‘গানের পাখি হাসন রাজা এবং তার পুত্র দৌহিত্র প্রপৌত্র কথা’ গ্রন্থের লেখক গল্পকার সেলিম আউয়ালের। বত্রিশটি বছর কেটে গেলেও কেউ কথা না রাখলেও গল্পকার সেলিম আউয়াল ঠিকই কথা রেখেছেন। তরুণ বয়সের হাসন রাজাকে নিয়ে তার কথিকা লেখাই তাকে অনুপ্রাণিত করে। ‘গানের পাখি হাসন রাজাকে’ নিয়ে তিনি আবার ভাবতে শুরু করেন। তার সেই ভাবনা থেকে হৃদয়ের কথামালা গুলো কভার বন্দি করার জন্য তিনি হাসন রাজাকে নিয়ে লিখতে শুরু করেন। তার ৭ম গ্রন্থ ‘গানের পাখি হাসন রাজা এবং তার পুত্র দৌহিত্র প্রপৌত্র কথা’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ বের করেন। তিনি মনে করেন, প্রতিটি মানুষের জীবনে যেন জন্মদিনটি একটি কর্মদিন হয়। আর সেই কথা কৈতর সিলেট এর উদ্যোগে গল্পকার সেলিম আউয়াল বাস্তবায়ন করেছেন তার ৫৪ তম জন্মদিনে একক বই প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে। আর সেই একক বই প্রদর্শনীতে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে জড়ো হয়েছিলেন সিলেটের লেখক, কবি, সাংবাদিক, সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতি ব্যক্তিবর্গরা। গল্পকার সেলিম আউয়ালের জন্মদিনে সেদিন তার শুভাকাংঙ্খিরা একক বই প্রদর্শণী অনুষ্ঠানে কেউ একটি করে, কেউ ৫টি করে আবার কেউ বই কিনে উপহার দিয়েছিলেন প্রিয় মানুষটিকে। সেদিন একক বই প্রদর্শণী অনুষ্ঠানে বইয়ের প্রতি লেখকদের ব্যতিক্রম ভালোবাসা ফুটে ওঠেছিলো। ছড়া দিয়ে লেখালেখির জগতে পা রাখলেও গল্পকার হিসেবেই তিনি সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু এবার তিনি নতুন কোন গল্প কিংবা উপন্যাস নয়, সৃষ্টি করলেন গবেষণামূলক গ্রন্থ। সাংবাদিকতা পেশার ব্যস্ততার মধ্যে যাঁরা সৃষ্টিশীল কাজের ধারা বজায় রাখতে পেরেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন গল্পকার সেলিম আউয়াল। ৭. লেখকের ৫৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে ২০১৭ সালে ‘সেলিম আউয়ালের একক বই প্রদর্শণী’ দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। ছোট্ট পরিসরে হলেও কোন লেখকের জন্মদিন উপলক্ষে এ ধরনের একক বই প্রদর্শনী সিলেটে এই প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। ছড়া দিয়ে লেখার জগতে পা রাখলেও সেলিম আউয়ালের এখন মূলত কথাসাহিত্যে পদচারনা। শিল্পতরু প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে গল্পগ্রন্থ ‘আমি এবং সে’। সাপ্তাহিক রোববার ঈদ সংখ্যা ২০০১-এ প্রকাশিত উপন্যাস ‘কুকুরের লাশ’ ঢাকার মৌলি প্রকাশনী বের করেছে ‘যুবতীর লাশ’ শিরোনামে। এই উপন্যাসটির দ্বিতীয় সংস্করণ কেমুসাস বইমেলা মার্চ ২০১২-এ বের করে সিলেটের পানশী। ‘সিলেট বিষয়ক লেখাজোখা (গবেষণা), তার তৃতীয় গ্রন্থ। তার চতুর্থ গ্রন্থ ‘শেকড় সন্ধানী ধ্যানী গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল(জীবনী), ৫ম গ্রন্থ ‘মরা গাঙে জল’, ৬ষ্ট গ্রন্থ ‘সাংবাদিক সংগঠক মো.বশিরুদ্দিন (জীবনী), ২০১৭ সালে তার ৭ম গ্রন্থ ‘গানের পাখি হাসন রাজা এবং তার পুত্র দৌহিত্র প্রপৌত্র কথা (গবেষণা), ৮ম গ্রন্থ ‘আবাবিল হয়ে দিয়ে যাই চুম (ভ্রমণ কাহিনী) ও ২০১৮ সালে ৯ম গ্রন্থ চ্যাঙের খালে ব্যাঙের ফাল, দশম গ্রন্থ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে বেদারুদ্দিন স্যার কবিতা শুনেন (গল্প), একাদশ গ্রন্থ বই নিয়ে বই (গ্রন্থ সমালোচনা)। তিনি ডা. এ রসুল সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬ লাভ করেন। । ৮.সাফল্য জীবনে কে না চায়! কারো কাছে সাফল্য নিজ থেকে এসেই ধরা দেয়, আবার অনেকে হাজার চেষ্টাতেও সাফল্যের সামান্যটুকুও খুঁজে পান না জীবনে। মানুষের জীবনে সব স্বপ্ন পূরণ হয় না। কিন্তু আমার জীবনে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। কারন জীবন থেকে যা কিছু দেবেন জীবন তারচেয়ে দ্বীগুন ফিরিয়ে দেবে-ই। হাঁটি হাঁটি পা পা করে জীবনের ১২টি বসন্ত পা রেখে কাজ করে যাচ্ছি আমার প্রিয় কর্মস্থল সিলেট সেন্টার ফর ইনফরমেশন এন্ড মাস্ মিডিয়া (সিফডিয়া)। সিলেটের প্রথম অনলাইন দৈনিক সিলেট সিফডিয়া ডটকম’র (পরবর্তী নামকরণ সিলেট এক্সপ্রেস ডটকম) সাংবাদিক ও গল্পকার সেলিম আউয়াল এর হাত দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। যাদের ভালোবাসা, ¯েœহ, আন্তরিকতা ও সহযোগিতা কাজ করে যাচ্ছি, শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব সাংবাদিক ও গল্পকার সেলিম আউয়াল সহ সিলেট এক্সপ্রেসের সম্পাদক আব্দুল বাতিন ফয়সল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আব্দুল মুহিত দিদার এবং আমার প্রাক্তন কলিগসহ বর্তমান কলিগ প্রত্যেকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ৯. কখনও কখনও আকাশে কালো মেঘ জমা হয়, ঝড় ওঠে, কিন্তু ভেংগে পড়ি না। যে কোন কাজের সফল হতে হলে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। কিভাবে চ্যালেঞ্জের সাথে কাজ করতে হয়, কিভাবে চ্যালেঞ্জ জিততে হলে দৃঢ়তা ও ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগাতে হয় তা জেনেছি। মানুষের জীবন হল একটি ছোট গল্প। আর সেই জীবনে হয়তো সব গল্পই পূরন হয় না, কিন্তু সারাজীবন তা মনে গেঁথে থাকে। তেমনি আমার জীবনে যাদের অবদান রয়েছে তাদের প্রত্যেকের কথা গেঁথে থাকবে হৃদয়ে। ভালোবাসার সিক্ত পথ হেঁটে যারা সামনের দিকে এগিয়ে যায়, তাদের কেউ কেউ অতীতটা ভুলে গেলোও কেউ আবার ভুলে না কখনো। আর যারা ভুলে না আমি তাদের মধ্যে একজন। যারা আমাকে ভালোবাসেন তাদেরকে কখনও কী ভুলা যায়। যায় না। জীবনে বাস্তবতা মুখামুখি দাঁড়িয়ে প্রতিকুলতা প্রতিহত করে কাজ করতে শিখেছি তা সমস্ত জীবনের পাওয়া। ১০. গল্পকার সেলিম আউয়ালকে যারা কাছ থেকে দেখেছেন, তারাই জানেন তার প্রতিটি লেখার মতই সরল পথে হেঁটে চলেছেন। সাহিত্য ¯্রষ্টার দান আর সাহিত্যিক ¯্রষ্টার প্রতিনিধি। এই প্রতিনিধির মধ্যে অন্যতম হলেন গল্পকার সেলিম আউয়াল। দুর্গম সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখান তিনি। আর সেই স্বপ্ন ফেরি করে বেড়ানো স্বপ্নবাজ মানুষটি ব্যাগ ভর্তি বই কাধে ঝুলিয়ে নতুন নতুন গল্প লেখার তাগিদ নিয়ে ছুটে বেড়ান এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সিলেটের সাহিত্যেঙ্গনে গল্পকার সেলিম আউয়াল একজন নিবেদিত প্রাণ সাহিত্যকর্মী। ১১. এ জগতে প্রতিটি মানুষ বেড়ে ওঠে এক একটি গল্পের ভেতর দিয়েই। মানবজীবনের সবচেয়ে বড় বাস্তবতা হলো, প্রতিটি মানুষের জীবনই একটি ইতিহাস, একটি গল্প। কিন্তু সবার জীবনের সেই গল্প লেখা হয় না। প্রতিটি মানুষের জীবনে আছে উত্থান-পতন, আছে সংগ্রাম, আছে দুঃখ-বেদনা, আছে ক্রমাগত স্বপ্নকে হাতে ধরার আক্ষেপ। একজন স্বপ্নবাজ সফল ব্যক্তিত্ব হলেন কথাশিল্পী সেলিম আউয়াল। তিনি সবসময় বলেন, আমাদেরকে কল্যাণকামী হতে হবে। লেখালেখির ব্যাপারে আমাদেরকে সিরিয়াস হতে হবে। বেশী করে অধ্যয়ন করতে হবে। নিজের লেখা সংরক্ষণে যতœশীল হতে হবে। সব কথার শেষ কথা আমাদেরকে কল্যাণকামী মানুষ হতে হবে। ‘একটি মানুষ ঠিক ততটুকু বড় হয়, যতটুকুু তাঁর স্বপ্নের দৈর্ঘ্য বড় হয়‘। স্বপ্নের ফেরিওয়ালা একজন গল্পকার হলেন সেলিম আউযাল। প্রতিদিন সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে সাহিত্য সৃষ্টির অবদানে কাজ করা সত্যিই অভিনন্দনযোগ্য। তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন সাহিত্যেকর্মে। তার সফল কথাসাহিত্যিক বৈচিত্র্য সৃজনশীল সৃষ্টিশীলকর্ম আরো সৃষ্টি হোক। সবশেষে তাঁর সৃষ্টিশীলতা আমৃত্যু সতেজ থাকুক এই প্রত্যাশা।