পুশইন চেষ্টা : বিএসএফকে সতর্ক করতে বললো ঢাকা

ভারতীয় একজন নাগরিককে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাংলাদেশে 'পুশইনের' চেষ্টাকে 'অনাকাঙ্খিত' বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। একই সঙ্গে তিনি বিএসএফকে এ বিষয়ে সতর্ক করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের 'পুশইন' চেষ্টা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশের সঙ্গে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই প্রতিক্রিয়া জানান। 

ভারতীয় হাইকমিশনার ভারতের পাঠানো ৩০ হাজার করোনা সনাক্তকরণ কিট পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের ফেনী নদী সীমান্ত দিয়ে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করানোর চেষ্টাকে অনাকাঙ্খিত বলে এ সময় ড. মোমেন উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সে বিষয়ে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সতর্ক করার অনুরোধ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানায়, ভারত থেকে আমদানিকৃত মালামালসহ পেট্রাপোল সীমান্তে আটকে থাকা ট্রাকগুলো বাংলাদেশে দ্রুত প্রবেশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন।

ড. মোমেন বলেন, ট্রাকগুলো আটকে থাকায় বাংলাদেশি আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ সময় রেলপথে উভয় দেশের মালামাল পরিবহনের বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় দেশের আমদানি ও রফতানিকারকদের সমস্যা দূর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ভারত থেকে আসা ৬১ জন ড্রাইভার ও তাদের সহযোগীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তাদেরকে দ্রুত ভারতে  ফেরত নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকর কাজ করছে। যে সব দেশে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের শ্রমিকরা আর্থিক ও খাদ্য সংকটে আছে তাদের সহযোগিতায় উভয় দেশ একত্রে কাজ করার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। যদি কোনো শ্রমিক দেশে ফেরত আসে তবে তারা যেন কমপক্ষে ছয় মাসের বেতনের সমপরিমাণ আর্থিক সহায়তা পায় সে বিষয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবকে ভারতের হাইকমিশনার স্বাগত জানান। 

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে দেওয়া 'কভিড-১৯ রিকোভারি অ্যান্ড রেসপন্স ফান্ড' গঠনের প্রস্তাবের বিষয়ে উল্লেখ করেন। সামপ্রতিক অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের ন্যাম সম্মেলনেও ড. মোমেন ফান্ড গঠনের একই প্রস্তাব তুলে ধরেন। এ ফান্ডে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আর্থায়ন করবে বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। বাংলাদেশের এ প্রস্তাবের সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার একাত্মতা প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। 

 

ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশি চিকিৎসা সেবীদের জন্য ভারত একটি ই-আইটিইসি কোর্স আয়োজন করছে। আগামী ১২ ও ১৩ মে ভূবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস ওই কোর্সটি বাংলাভাষায় পরিচালনা করবে।