করোনা টেস্টের জন্য সস্তার কিট তৈরি করেছেন কলকাতার বিজ্ঞানীরা

করোনা পরীক্ষার জন্য বিদেশি কিটের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে সাধারণের মাঝে দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে কলকাতার একদল বিজ্ঞানী সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে, ভারতীয় মালমশলায় তৈরি ৪০ লক্ষ কীট নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন বাণিজ্যিকভাবে টেস্ট চালু করতে। এই কিট তৈরি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের একটি বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞানীরা। তবে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সমিত আঢ্য এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান কৌস্তভ পান্ডা। কোভিড-১৯ চিহ্নিতকরণের এই টেস্ট কিটের দাম মাত্র ৫০০ রুপি। মাত্র একটা কিটেই ১৬০ জন রোগীর পরীক্ষা করা যাবে। অর্থাৎ মাথাপিছু খরচ পড়বে ৩ রুপির সামান্য বেশি। নতুন কিট বাজারে আসার পর এক একটা ল্যাবে অনায়াসে দিনে ১,০০০ জনের পরীক্ষা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন প্রস্তুতকারী সংস্থা জিসিসি বায়োটেক ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের বিজ্ঞানীরা। এই কিটের মাধ্যমে মাত্র ৯০ মিনিটে পরীক্ষার ফল জানা যাবে। সদ্য সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরেও ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যাবে। ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের প্রাথমিক স্বীকৃতির পর ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চও (আইসিএমআর) স্বীকৃতি দিয়েছে এই কীটকে। বিজ্ঞানীদের মতে, নোভেল করোনা আরএনএ ভাইরাস খুবই সুচতুর। ধুরন্ধর অপরাধীর মতো ক্রমাগত চরিত্র ও চেহারা বদলানোয় সিদ্ধহস্ত। তাকে এই নতুন কিট তার জোড়া ছাঁকনিতে সহজেই ধরে ফেলবে বলে দাবি করা হয়েছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী শমিত আঢ্য জানিয়েছেন, তারা প্রধমে ‘ফোর-প্রাইমার’ কিট তৈরি করেছেন । তবে এখন বাণিজ্যিক উৎপাদন চলছে টু-প্রাইমার বা দুটো ছাঁকনির কিটের। ফোর প্রাইমার যুক্ত কিটটি বর্তমানে রোগনির্ণয়ের কাজে না লাগলেও সেটি ভাইরাসের চরিত্র বুঝতে গবেষণাগারে ব্যবহৃত হতে পারে। করোনাভাইরাস যেহেতু রূপ বদলায়, সে কারণে গবেষণায় এই কিটটি উপযোগী হবে। আরেক বিজ্ঞানী ড. পান্ডা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকেও প্রচুর অর্ডার আসতে শুরু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে।