শাহপরানে ৩ খুন, কিশোরকে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ

শহরতলির শাহপরান থানার মীরমহল্লায় সৎ মাসহ তিনজনকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক কিশোরকে (১৭) গাজীপুরের টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই কিশোরের বয়সের প্রমাণপত্র দাখিল করায় সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটায় শিশু আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে কিশোরের জন্মসনদ ও বিদ্যালয়ের সনদ উপস্থাপন করেন। এসব সনদ অনুযায়ী কিশোরের বয়স ১৭ বছর ১ মাস। এসময় শিশু আদালতের বিচারকের দায়িত্ব পালন করা জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান তাকে টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেটের প্রবেশন কর্মকর্তা তমির হোসেন চৌধুরী সিলেট মিররকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শাহপরান থানা পুলিশের ‘শিশু ডেস্ক’ এর মাধ্যমে ওই কিশোরের বয়সের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করে শিশু আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই কিশোর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদপত্র অনুযায়ী বয়স ১৭ বছর ১ মাস। বয়সের এই প্রমাণপত্র শিশু আদালতে দাখিল করলে বিচারক এ আদেশ দেন। মঙ্গলবার পুলিশের মাধ্যমে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।’ তিনি জানান, শিশু আদালতে কিশোরের বিচার শিশু আইন ২০১৩ ও জাতীয় শিশু সুরক্ষানীতি মেনে চলবে। এই বিচার প্রক্রিয়ায় শিশু আইন নির্দেশিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন সহায়তা করবে। শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘গত রবিবার ওই কিশোরের জন্মসনদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদ আমরা সংগ্রহ করেছি। এসব সনদ পর্যালোচনা করে দেখা যায় তার জন্ম ২৫ ডিসেম্বর ২০০৩। সেক্ষেত্রে ঘটনার সময় তার বয়স ১৭ বছর ১ মাস ২৪ দিন। নিয়ম অনুযায়ী তাকে এখন কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।’ শাহপরাণ থানার পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মীরমহল্লায় শয়নকক্ষ থেকে রুবিয়া বেগম চৌধুরী (৩০) ও তার মেয়ে জান্নাতুল হোসেন মাহির (৯) লাশ উদ্ধার করা হয়। রুবিয়া বেগম চৌধুরীর ছেলে তাহসান হোসেন খানের (৭) মৃত্যু হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এ সময় রক্তমাখা ছুরিসহ রুবিয়ার সৎ ছেলেকে (১৭) আটক করে পুলিশ। আটকের পর ওই কিশোর পুলিশকে জানায়, ভাত খেতে চেয়ে না পাওয়ায় সৎ মা ও ভাই-বোনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সে। এরপর গত শুক্রবার রাতে নিহত রুবিয়ার ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওই কিশোরকে আসামি করে শাহপরাণ থানায় হত্যা মামলা করেন। এদিকে, গত শনিবার দুপুরে মহানগর পুলিশ ওই কিশোরের নাম ও পরিচয় উল্লেখ করে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এতে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কিশোরের বয়স ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়। তবে কিশোরের বাবা আবদাল হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানান, তার ছেলের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তার জন্ম ২০০৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। ১৭ বছর বয়সী কিশোরের বয়স মামলার এজাহারে ১৯ বছর নির্ধারণ করা প্রসঙ্গে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আনিসুর রহমান জানিয়েছিলেন, বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে কিশোরের বাবার দেওয়া তথ্যমতে।