'টিকার মিশ্র ডোজ নেওয়া বিপজ্জনক', জানাল হু

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ভ্যাকসিনের অদলবদল শুরু হয়েছে। প্রথম ডোজে একরকম ভ্যাকসিন নেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়া হচ্ছে অন্য ভ্যাকসিনের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রথম ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা এর কারণ হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ইচ্ছে করেই ভ্যাকসিন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চলছে। দুটি আলাদা আলাদা ভ্যাকসিনের ডোজ নিলে তা আরও বেশি সুরক্ষা দেবে বলে ধারণা। এই ভাবনা চিন্তাকেই এবার সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একাধিক সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিনের অদলবদল করে পাঁচমিশালি ভ্যাকসিন নিলে তা আদতে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, জানিয়েছেন হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। তিনি বলেছেন, 'এই নতুন ট্রেন্ড বিপজ্জনক। কারণ পাঁচমিশালি ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই, পর্যাপ্ত তথ্যও নেই।' অতিমহামারী মোকাবিলায় একে একে অনেক ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে।

বাজারে এসেছে নতুন নতুন নাম। কিন্তু কোন ভ্যাকসিন সবচেয়ে কার্যকর, কোন ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হবে, এসব প্রশ্নকে ছাপিয়ে গেছে পাঁচমিশালি ভ্যাকসিনের ধারণা। অনেক দেশেই দেখা যাচ্ছে, কোভিড থেকে বাড়তি সতর্কতার জন্য ভ্যাকসিনের দুটো ডোজের পরেও আবার নেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ। ধারণা, তাতে ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও খানিক বাড়বে। কিন্তু সবটাই ধারণার পর্যায়ে। তথ্য প্রমাণসহ কিছু এখনও আমাদের সামনে আসেনি। তাই বিপদ হয়ে যেতেই পারে যে কোনও সময়। অথবা অজানা বিপদ বাসা বাঁধতে পারে ভবিষ্যতের জন্যেও। এদিন সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছেন, মানুষ যদি আগামী দিনে নিজে নিজেই ঠিক করে নেয় কে কখন কোন ভ্যাকসিন নেবেন, কটি বুস্টার ডোজ নেবেন, তবে দেশে দেশে সাংঘাতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এটা একেবারেই কাম্য নয়। বিদেশেই বহু ক্ষেত্রেই সরকারের তরফে পাঁচমিশালি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ভারতে একাধিক বার শোনা গেছে কোভিশিল্ড আর কোভ্যাকসিনের অদলবদল। কোথাও কর্তৃপক্ষের ভুলে এক ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে অন্য ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলেছেন মানুষ। কোথাও আবার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই এমনটা করার ইচ্ছা প্রকাশ হচ্ছে। চিনের সিনোভ্যাকের পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়ার পরেও কয়েকশ' স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর টিকা নীতিতে পরিবর্তন এনে মিশ্র ডোজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ড। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি জানিয়েছে, কেউ প্রথম ডোজ হিসেবে সিনোভ্যাকের টিকা নিয়ে থাকলে, তাদের দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হবে। আর সিনোভ্যাকের দুই ডোজ টিকা নেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের বুস্টার ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাই সরকার। তবে মিশ্র ডোজ নিয়ে সতর্ক করে সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, নাগরিকেরা যদি টিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ হিসেবে কোন টিকা কখন নেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে দেশে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।