ভারতের প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রাজন সিংয়ের বাড়িতে আগুন দিয়েছে জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে কারফিউয়ের মধ্যেই হাজারেরও বেশি মানুষ তার ওপর চড়াও হয়। এ সময় বাড়ির চারদিক থেকে পেট্রলবোমা ছুঁড়ে মারে উত্তেজিত জনতা। এ নিয়ে রাজন সিংয়ের বাড়িতে দ্বিতীয়বারের মতো হামলা চালামন্ত্রীর বাড়িতে প্রথম হামলা হয় গত মাসে। সে সময় বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এবার হামলাকারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাধা দিতে পারেননি তারা।
জতিগত দাঙ্গা কবলিত ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দাঙ্গার ঘটনায় সেখানে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী রাজন সিং এ দাঙ্গা থামাতে দুইপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছিলেন বলে জানায় ভারতীয় গণমাধ্যম।বৃহস্পতিবার রাতে হামলার সময় রাজন সিং নগরীর কোংবা এলাকার ওই বাড়িতে ছিলেন না। তবে সেখানে মন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের নয় সদস্য, পাঁচ নিরাপত্তা রক্ষী ও অতিরিক্ত আরও আটজন রক্ষী ছিলেন বলে জানান রাজ্য কর্মকর্তারা।
মন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের কমান্ডার দিনেশ্বর সিং জানান, উত্তেজিত জনতা চারদিক থেকে বাড়ি লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে। প্রায় ১২০০ মানুষ বাড়িটিতে হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের সংখ্যা এতো বেশি হওয়ায় তারা তাদের বাধা দিতে পারেননি।
মণিপুরের ৩৬ লাখ জনগোষ্ঠীর ৫৩ শতাংশই মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর সদস্য, যারা মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বী বা হিন্দু সম্প্রদায় হিসেবে চিহ্নিত। এদের অধিকাংশেরই বসবাস ইম্ফল উপত্যকায়। বাকি ৪৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে কুকি ও নাগারা প্রধান। তারা পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
১৯৮৯ সালে মণিপুরের শাসক ভারতের যুক্তরাজ্য ব্যবস্থায় যোগ দেওয়ার পর থেকে এখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। কিন্তু গত মাসে শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গা ও সহিংস পরিস্থিতি গত কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন আইনি অধিকার নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সঙ্গে নাগা ও কুকি সম্প্রদায়ের সহিংসতা ও দাঙ্গা চলছে।
মন্তব্য