নৌকা পেলেন সিলেটের ১৯ ভাগ্যবান

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। 

শনিবার (২৫ নভেম্বর) সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থী মনোনয়নের মধ্য দিয়ে সব আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত হয় ক্ষমতাসীন দলটির।

বিভাগের ১৯টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১৭২ জন। এরমধ্যে ১৪৮ জন নৌকার প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়ন জমা দেন। তাদের মধ্য থেকে নতুন-পুরাতনের মিশেলে ১৯ সৌভাগ্যবানকে নৌকায় তুলেছেন শেখ হাসিনা। এরমধ্যে ৮টিতে এসেছে এবার নতুন মুখ। এরমধ্যে সিলেটে ১ জন, সুনামগঞ্জে ৩ জন, মৌলভীবাজারে ২ এবং হবিগঞ্জে ২ জন।

সিলেট বিভাগে নৌকার নতুন কাণ্ডারীরা হলেন- সিলেট-৫ আসনে বীর মুক্তিযোদ্ধ মাসুক উদ্দিন আহমদ, সুনামগঞ্জ-১ আসনে অ্যাডভোকেট রণজিৎ সরকার, সুনামগঞ্জ-২ চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী), সুনামগঞ্জ-৪ ড. মুহাম্মদ সাদিক, মৌলভীবাজার-১ আসনে শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ আসনে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মৌলভীবাজার-৩ আসনে জিল্লুর রহমান, হবিগঞ্জ-১ আসনে অ্যাডভোকেট ড. মুশফিক হোসেন এবং হবিগঞ্জ-২ আসনে ময়েজ উদ্দিন শরিফ রুহেল।

সিলেট-১ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন। তার সঙ্গে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আরও ২ জন।

সিলেট-২ আসনে শফিকুর রহমান চৌধুরী দুই মেয়াদ বিরতির পর মনোনয়ন পেয়েছেন। তার সঙ্গে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলন আরও ৭ জন।

সিলেট-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তার সঙ্গে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আরও ৮ জন।

সিলেট-৪ আসনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ফের নৌকার মাঝি হলেন। তার সঙ্গে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আরও ৮ জন।সিলেট-৬ আসনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদেই ভরসা আওয়ামী লীগের। এ দুই আসনে নাহিদকে চ্যালেঞ্জ করে আরও ১৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এছাড়া পুরাতনদের মধ্যে সুনামগঞ্জ-৩ আসনে এম এ মান্নান ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মুহিবুর রহমান মানিক। মৌলভীবাজার-১ আসনে শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-৪ আসনে উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ। হবিগঞ্জ-৩ আসনে আবু জাহির এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে মাহবুব আলী।

সিলেট জেলার অন্তর্গত ৬টি আসনের মধ্যে সিলেট-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্ত্বিত্ব হাফিজ আহমদ মজুমদার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে এ আসনে নতুন মুখ হিসেবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধ মাসুক উদ্দিন আহমদকে নৌকার প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এ আসনে আরও ৬ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। 

এছাড়া গত ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদল জাপাকে সিলেট-২ আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। যে কারণে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত ছিলেন আসনটির সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী।

২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনটি ফের শরিক দলকে ছেড়ে দিলেও জিততে পারেননি জাপার সাবেক এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। তাকে হারিয়ে গণফোরামের মোকাব্বির খান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দু’টি নির্বাচনে দলের প্রতি আনুগত্য থাকায় পুরস্কার স্বরূপ এবার আসনটিতে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে নৌকার কাণ্ডারি করা হয়েছে। আসনটিতে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আরও ৭ জন।   

সুনামগঞ্জ-১ আসনে বাদ পড়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। এ আসনে সর্বাধিক ১৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এরমধ্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ-২ আসনে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিৎ সেন গুপ্ত’র সহধর্মিনী জয়া সেন গুপ্তাকে বাদ দিয়ে বর্তমান আইজিপির সহোদর চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে (আল-আমিন চৌধুরী) নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ আসনটিতে ১২ জন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে এম এ মান্নানেই ভরসা দলের। তাকেই নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তবে আরও ২ জন নৌকা প্রত্যাশী ছিলেন।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে প্রথমবারেই বাজিমাত বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকের। নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ১০ প্রার্থীর মধ্যে তাকেই বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আর সুনামগঞ্জ-৫ আসনে ফের মুহিবুর রহমান মানিকেই ভরসা আওয়ামী লীগের। তার সঙ্গে নৌকা প্রত্যাশী ছিলেন আরও ৫ জন। 

মৌলভীবাজার-১ আসনে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ফের নৌকা প্রতীক পেলেন, তার সঙ্গে আরও ৫ জন নৌকা চেয়েছিলেন।

মৌলভীবাজার-২ আসনে চমক দেখিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিসিবির পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এ আসনে আরও ৪ প্রার্থী ছিলেন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। 

মৌলভীবাজার-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুন মুখ জিল্লুর রহমানকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এ আসনে আরো ৬ জন নৌকা চেয়েছিলেন।মৌলভীবাজার-৪ আসনে উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ আবারো নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ আসনে আরো ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। হবিগঞ্জ-১ আসনে এবার বাদ গেলেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজ গাজি। তাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ আসনটিতে মোট ৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

হবিগঞ্জ-২ আসনে অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানকে বাদ দিয়ে এবার জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ময়েজ উদ্দিন শরীফের হাতে নৌকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এ আসনে মোট ৯ জন প্রার্থী ছিলেন।

হবিগঞ্জ-৩ আসনে আবু জাহির ও হবিগঞ্জ-৪ আসনে মাহবুব আলী ফের নৌকার কান্ডারি করা হয়েছে। এ দুই আসনে যথাক্রমে ৪ ও ৯ জন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।