জাতীয় পার্টির নির্বাচনে থাকা না-থাকা নিয়ে শঙ্কা আছে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টির নির্বাচনে থাকা না-থাকা নিয়ে শঙ্কা আছে। এটা নিয়ে আমাদের দলের অনেকেরই শঙ্কা আছে; দেশের জনগণের মাঝেও শঙ্কা আছে। কিন্তু বিষয়টি চূড়ান্ত কথা হিসাবে এ মুহূর্তে আমরা বিবেচনায় আনতে মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গঠিত দপ্তর উপকমিটির সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা ব

ওবায়দুল বলেন, ‘ডেমোক্রেসিতে অনেক কিছু সম্ভব। বয়কট করা, ওয়াকআউট করা- এসব বিষয় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সব জায়গাতেই আছে। কী হবে এটা তো এ মুহূর্তে বলতে পারছি না, হলেও হতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমি কী করে বলব, তারা সরে যাবে। এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’

জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট না করতে প্রধানমন্ত্রীকে রওশন এরশাদের অনুরোধের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রওশন এরশাদ এখনো বিরোধীদলীয় নেতা। আমাদের সংসদ কিন্তু ভেঙে দেওয়া হয়নি। সে হিসাবে বিরোধীদলীয় নেতা সংসদীয় দলের নেতার সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে শুধু একটা কথাতেই টানাপোড়েন আসবে এমনটি নয়। প্রধানমন্ত্রীকে রওশন এরশাদ তার ক্ষোভের কথা জানাতে পারেন এবং তার সঙ্গে যারা নেই, তাদের বিরুদ্ধে তিনি বলতে পারেন। কিন্তু একটি পার্টি হিসাবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে অ্যালায়েন্স থাকবে না বা আমরা ইলেকশন করব না; এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের হয়নি। কাজেই এ ব্যাপারে আমরা এখনই শেষ কথা বলতে পারছি না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। ইলেকশন আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং। দেশের নাম্বার ওয়ান অপজিশন ইলেকশনে নেই। শুধু না থাকা বা বয়কট নয়, তারা ইলেকশনকে ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্র করছে, সন্ত্রাসও করছে। এর সঙ্গে বিদেশি কারও কারও হাতও রয়েছে। তাদের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যও আছে। এখানে তাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থও জড়িত থাকতে পারে। তাদের ব্যবসায়িক প্রাপ্তির একটা ক্ষেত্র তৈরি করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সামরিক দিক থেকে এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারে আবার নিজেদের শক্তিকে অক্ষুন্ন রাখতে চায় তারা। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, এই অঞ্চলে কারও কারও এয়ারবেজ করারও স্বপ্ন আছে। কাজেই এসব দিক থেকে আমাদের জন্য ইলেকশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের লক্ষ্য ইলেকশন ভন্ডুল করা। ক্ষমতার মঞ্চ থেকে শেখ হাসিনাকে হটানো।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই ইলেকশনে সম্মানের সঙ্গে জেতা, আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এটা আমাদের অতিক্রম করতে হবে। গোটা দুনিয়ায় আজকে বিএনপির অনুপস্থিতির যে প্রতিক্রিয়া, সেই বিষয়টা যেন পার্টিশিপেটরি টার্নআউট দিয়ে আমরা কভার করতে এবং নির্বাচনটা পিসফুল করতে পারি, সেটা খুব জরুরি। তার জন্য সবাই প্রস্তুত হন। এখন তো অফিসে বসে গল্প-গুজব করছেন, ১৬ তারিখের পর আর হবে না। ১৬ তারিখের পর সবাইকে কাজে নেমে পড়তে হবে। সময় খুব কম। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পেইনের সুযোগ আছে। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ২০ তারিখ যাবেন সিলেট। সেখান থেকে এসে আরও কয়েক জায়গায় তিনি যেতে পারেন। তিনিও ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। এজন্য সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং দলের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফরউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, মারুফা আক্তার পপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, উত্তরের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।