বিজয় র‌্যালিতে আত্মগোপনে থাকা নেতাদের অংশ নেওয়ার নির্দেশ

মহান বিজয় দিবসে ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে ‘বিজয় র‌্যালি’ করবে বিএনপি। এতে বড় ধরনের জমায়েতের পরিকল্পনা করছে দলটি। ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের জেলার নেতাকর্মীও এতে অংশ নেবেন। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। আত্মগোপনে থাকা নেতাদেরও এদিনের কর্মসূচিতে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে মিরপুরের শহিদ বুদ্ধিজীবী মাজারে যাবেন নেতারা। এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভাও করবে। এসব কর্মসূচি সফল হলে ১৮ ডিসেম্বর পরবর্তী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। যাকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব বলছেন নেতারা। তবে কি ধরনের কর্মসূচি দেবে তা এখনো চূড়ান্ত করেনি। ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়ে এ পর্ব শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা। এ নিয়ে সমমনাসহ নির্বাচন বর্জন করা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি আলোচনা করবে বলে দলীয় সূতবিজয় র‌্যালি করার অনুমতির জন্য ইতোমধ্যে ডিএমপিতে চিঠি দিয়েছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। বুধবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ডিএমপি কমিশনার অফিসে গিয়ে চিঠি দেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান। ডিএমপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে নিতাই রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি করবে বিএনপি। দুপুর ১টায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যাঢলি শুরু হবে। র্যা লিটি মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে। র‌্যালির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে ডিএমপি কমিশনার ছিলেন না। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ. ম. মুহিদ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেছি। তিন

অনুমতির বিষয়ে ডিএমপি থেকে কি বলা হয়েছে জানতে চাইলে নিতাই রায় বলেন, আমরা চিঠি ডিএমপিতে দিয়ে এসেছি। তারা আমাদের জানিয়ে দেবেন। হয়তো বৃহস্পতিবার (আজ) জানতে পারব। অনুমতি না পেলে বিএনপি র‌্যালি করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা পরের কথা। সেটা দল সিদ্ধান্ত নেবে। নয়াপল্টন কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকার বিষয়ে নিতাই রায় বলেন, এ বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। বিষয়টির সমাধান হবে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, প্রায় দেড় মাস ধরে বিএনপি ও সমমনা দলের ডাকা হরতাল ও অবরোধ এখন অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও দল বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায়। আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নেতারা জানান, বড় জমায়েত করার জন্য জাতীয় দিবসের কর্মসূচিকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগাতে চান তারা। যদিও বিজয় দিবসে র্যাযলি করা হবে কিনা এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন দলের নীতিনির্ধারকরা। আওয়ামী লীগের ঘোষণার পর বিএনপিও কর্মসূচি করার অনুমতি পাবে বলে তাদের বিশ্বাস। আর বিজয় উদ্যাপনের এমন দিবসের কর্মসূচির অনুমতি পেলে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়বে বলেও তারা মনে করেন। ২৯ অক্টোবর থেকে তালাবদ্ধ থাকা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ওইদিন মিছিল বের করা হবে। এতে আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন।

বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হবে। এরপর শুরু হবে নির্বাচনি গণসংযোগ। ১৮ ডিসেম্বরের পর বিএনপিও তাদের চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি শুরু করবে। প্রতীক বরাদ্দের পর কর্মসূচিগুলো কঠোরভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিতীয় পর্বের কর্মসূচি শুরুর আগে ঢাকায় বড় জমায়েত করতে পারলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হবে। কারণ দীর্ঘদিন হরতাল-অবরোধের মধ্যে থেকে নেতাকর্মীদের মধ্যে একঘেয়েমি তৈরি হয়েছে। আন্দোলনে এখনো সফলতা না আসায় তাদের মধ্যে কিছুটা হতাশাও আছে। এরপরও অন্তত ভোট পর্যন্ত কঠোর কর্মসূচিতেই থাকতে চায় দল।ি চিঠি গ্রহণ করেন।