মৌলভীবাজারে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, আটক ৪

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার শহরের সোনাপুর বড়বাড়ি এলাকায় একটি ছাত্রী মেসের মেয়েদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ৪ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মৌলভীবাজার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এ সময় মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গতকাল বুধবার (১৫ মে) দিবাগত রাতে মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, নাভেদ (১৮), সায়েম (২৪), মুন্না (২২) ও লোকমান (২৪)। উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধীত) ২০০৩ এর ১০/৩০ এই ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন শিক্ষক সুমন কান্তি দেব নাথ। ওই মামলার প্রেক্ষিতে ৪ যুবককে আটক করা হয়েছে। থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরের সোনাপুর বড়বাড়ি শফিকুর রহামান শফিকের বাড়িতে ভাড়াটে (মেস) হিসেবে থাকেন মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী জাহানারা আক্তার জুলি, সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুইটি রাণী দেব ও বিউটি রাণী দেব। দীর্ঘদিন থেকে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে পথরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব, নানা অশ্লীল কথা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের উত্ত্যক্ত করত ওই এলাকার কিছু যুবক। গত সোমবার বিকেলে সুইটি রাণী দেব কলেজের ইনকোর্স পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফেরার সময় বাসার উঠানে বসে থাকা নাভেদ আহমদ তার সহযোগী সায়েম, মুন্না ও লোকমান তাকে উদ্দেশ্য করে নানা অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে থাকে। এ সময় সুইটি বাসায় থাকা তার অন্য দুই সহপাঠী জুলি ও বিউটিকে ঘটনাটি জানান। তারা ৩ জন ঘর থেকে বের হয়ে একসাথে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে নাভেদ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জুলি আক্তারের চুলে ধরে তাকে মাটিতে ফেলে তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দেয়। এ সময় জুলির সহপাঠী সুইটি ও বিউটি প্রতিবাদ জানালে সায়েম, লোকমান ও মুন্নাসহ আরো ২-৩ জন তাদের দু’জনকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে তাদের আহত করে। তারা সকলে মিলে ছাত্রীদের মারধর করে ও তাদের পরনের কাপড় খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। মেয়েরা ঘটনাটি মুঠোফোনে সুইটি ও বিউটির খালাতো ভাই কাশিনাথ আলা উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সুমন কান্তি দেব নাথকে জানালে তিনি কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বাড়ির মালিক ও নাভেদ আহমদের চাচা শফিকুর রহমানের কাছে বিচার প্রার্থী হন। এই খবর শুনে নাভেদ আহমদসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা যৌন হয়রানির শিকার ওই ৩ জন ছাত্রীসহ উপস্থিত সকলকে গালিগালাজ করে হেনস্তা করে। তারা হুঁশিয়ারী দিয়ে বলে, এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা ও বাড়াবাড়ি করলে সবাইকে দেখে নেবে। ওই ঘটনার পর সুমন কান্তি দেবসহ উপস্থিতরা আহত জুলি, সুইটি ও বিউটিকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।