বড়লেখায় নারী আইনজীবী হত্যা: মামলা হয়নি,জট ও খুলেনি

বড়লেখা প্রতিনিধি :মৌলভীবাজারেরর বড়লেখায় নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানার (৩৫) খুনের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। এখন পর্যন্ত এই হত্যার জটও খুলতে পারেনি পুলিশ। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় আবিদা সুলতানাদের বাড়িতে ভাড়া থাকা স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম তানভীর আলমকে আটক করেছে। তবে তানভীর হত্যার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কিছু স্বীকার করেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিকে ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়েছেন আবিদার স্বামী শরীফুল ইসলাম। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। সোমবার রাতে আবিদার জানাজা শেষে স্বামী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কাউকে সন্দেহ করছি না। তবে আমার স্ত্রীকে যারা খুন করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এজন্য পুলিশের প্রতি আমার অনুরোধ তারা যেন প্রকৃত আসামিকে দ্রুত বের করে।’ রাত সাড়ে সাতটায় স্থানীয় একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে আবিদার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। এর আগে ময়না তদন্ত শেষে আবিদার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। রোববার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুল গ্রামের পৈতৃক বাড়ি আবিদা সুলতানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রোববার বেলা বারোটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার যেকোনো সময় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। নিহত আবিদা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির মাধবগুল গ্রামের মৃত আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে। সোমবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও বড়লেখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার পর থেকে আবিদার বাবার বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলম (৩০) পলাতক ছিলেন। এদিকে কী কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য তারা কাজ করছেন। রাতে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইমাম তানভীর আলমকে সোমবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউপির বরুনা এলাকা থেকে আটক করা হয়। এর আগে তানভীরের মা ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় বলেন, ‘ঘটনার পর আবিদার বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া ইমাম তানভীর পালিয়ে গিয়েছিলেন। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের বিষয়ে সে মুখ খুলছে না। বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’ এদিকে নারী আইনজীবী আবিদা সুলতানা খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এবং কর্মবিরতি পালন করেছেন মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এসএম আজাদুর রহমান আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বারের সাবেক সভাপতি শান্তি পদ ঘোষ, রমাকান্ত দাস গুপ্ত প্রমুখ। এছাড়া সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, মৃত আব্দুল কাইয়ুমের তিন মেয়ের মধ্যে আবিদা সুলতানা বড়। প্রায় ৮ বছর আগে লালমনিরহাটের আদিতমারি থানার শরীফুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। আবিদা মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। তাঁর স্বামী শরীফুল ইসলাম একটি ওষুধ কোম্পনীতে চাকরী করেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে মৌলভীবাজার শহরে বসবাস করতেন।