জগন্নাথপুরে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না

জগন্নাথপুর প্রতিনিধ: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু না হওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এসুযোগ কে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর ধান ব্যবসায়ী কৃষকদের নিকট থেকে কম দামে ধান কিনে মজুদ করে রাখছেন। সরকারী গুদামে ধান বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা কম দামে কৃষকের ধান কিনছেন। কৃষকদের নিয়ে কাজ করা সামাজিক সংগঠন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম কে বলেন, দুই বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পর এবার কৃষকরা ধান তুলতে পেরেছেন। অভাব, অনটন ও কৃষি কাজের খরচ বের করতে সারা বছরের ধান রেখে উদ্বৃত ধান কৃষকরা বিক্রি করতে চাইছেন। তিনি জানান,সরকারিভাবে প্রতি মণ ধান এক হাজার ৪০ টাকায় নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা কিছু আশাবাদী হন। কিন্তুু ধান কাটা শেষ হওয়ার পরও খাদ্য গুদামে ধান কেনা শুরু না হওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়ে কমদামে অতিরিক্ত মুনাফা লোভী ধান ব্যবসায়ীর কাছে ছয়শত থেকে সাড়ে ছয়শত টাকা মণে ধান বিক্রি করছেন। উপজেলার নলুয়ার হাওর পাড়ের দাসনোওয়াগাঁও গ্রামের কৃষক গুনেন্দ্র দাশ জানান, এক হাল সমান ১২ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করে ধান পেয়েছেন ২০০মণ। সারা বছরের খাবার জোগাতে তার পরিবারে ধান লাগবে ১০০মণ। বাকী ধান বিক্রি করে বোরো চাষের ঋণ ও পারিবারিক নানা কাজ করতে চান। সরকারী খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় না করায় তিনি নিরুপায় হয়ে ছয়শত টাকা দরে ৫০মণ ধান বিক্রি করে ঋণ দিয়েছেন। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন,নৌকা যোগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বড় বড় ধান ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে কৃষকের ধান কম দামে কিনে নিয়ে আসছেন। এতে করে প্রকৃত কৃষকরা ধানের নায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জগন্নাথপুর বাজারের ধান,চাল ব্যবসায়ী সফর উল্লা ট্রেডাসের ছালিকুর রহমান জানান,হাওরে শুকনো ধান ছয়শত থেকে সাড়ে ছয়শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক কৃষক নিজের ইচ্ছেয় এ দরে ধান বিক্রি করতে আমাদের নিকট ধর্ণা দিচ্ছেন। তাই কিছু ধান ক্রয় করে রাখছি। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব বলেন,সময়মতো কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে না পারায় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মুনাফা লোভীরা পরে গুদামে ধান বিক্রি করে লাভবান হবেন। তিনি দ্রুত প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করার দাবি জানান। জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ধীরাজ নন্দী চৌধুরী বলেন, অচিরেই ধান চাল ক্রয় উপজেলা কমিটির সভা করে ধান চাল কেনা শুরু করা হবে।