ধর্মপাশায় আহত হওয়ার ৮ দিন পর নারীর মৃত্যু, আটক ২

ধর্মপাশা  প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বাড়ির সামনের রসুন ক্ষেত নষ্ট করা নিয়ে মারামারির ঘটনায় নূরুন্নাহার বেগম (৪৫) নামে এক নারী আহত হওয়ার ৮ দিন পর মারা গেছেন। শুক্রবার বিকেলে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে আহতাবস্থায় নূরুন্নাহারের মৃত্যু হয়। নিহত নূরুন্নাহার উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের দিনমুজুর আব্দুল মোতালিবের স্ত্রী। গত ১৬ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার মহেষপুর গ্রামের আব্দুল মোতালিবের স্ত্রী নূরুন্নাহারের বাড়ির সামনের রসুন ক্ষেত নষ্ট করা নিয়ে তারই প্রতিবেশী শামছু মিয়ার স্ত্রী নাজমা আক্তারসহ (৪২) তার লোকজনের সাথে এ মারামারির ঘটনাটি ঘটে। খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে নাজমা আক্তার ও একই গ্রামের নূরু-ন্নবীর কিশোরি কন্যা মনি আক্তারকে (১৫) আটক করে। পুলিশ নিহত নূরুন্নাহারের লাশ উদ্ধার করে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়না-তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহেষপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি গত প্রায় ২০ বছর ধরে একই গ্রামের দিনমুজুর আব্দুল মোতালিবকে তাঁর বাড়ি-ঘর দেখাশুনা করার দায়িত্বে রেখে তিনি স্ব-পরিবারে শহরে বসবাস করেন। আর তখন থেকেই দিনমুজুর আব্দুল মোতালিব স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ওই বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। গত প্রায় ১৫-১৬ দিন আগে আব্দুল মোতালিব ওই বাড়ির সামনের রিয়াজ উদ্দিনের একটি ক্ষেতে রসুন চাষ করেন। গত ১৬ নভেম্বর বিকেলে তারই প্রতিবেশী শামছু মিয়ার শিশু পুত্র (৬)সহ ৪-৫ জন শিশু খেলার চলে ওই রসুন ক্ষেতে ঢুকে তারা খেলা করতে থাকে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে আব্দুল মোতালিবের স্ত্রী নূরুন্নাহার দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষেত থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার কথা বলে শিশুদেরকে গালমন্দ করতে থাকেন। পরে এ নিয়ে শামছু মিয়ার স্ত্রী নাজমা আক্তারের সাথে নূরুন্নাহারের বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে নাজমাসহ ৪-৫ জন নারী এক হয়ে নূরুন্নাহারকে এলোপাথারী মারধর করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্য লোকজন ঘটনাস্থলে এসে সকলকেই শান্ত করেন এবং তারা নুরুন্নাহারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে নুরুন্নাহারের শারীরীক অবস্থার অবনতি দেখে বাড়ির লোকজন তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথেই তার মৃত্যু হয়। ধর্মপাশা থানার ওসির দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক কিশোরিসহ দুইজনকে আটক করি এবং নিহতের লাশ উদ্ধার করে ওইদিন সন্ধ্যায় ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।