ওসমানী হাসপাতালে ফার্মেসি মালিক-দালালদের হামলায় প্রভাষকসহ আহত ৭

নন্দিত সিলেট:ওষুধের অতিরিক্ত মূল্য রাখাকে কেন্দ্র করে ফার্মেসি মালিক ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলের দালালদের হামলায় ৭ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২ প্রভাষকও রয়েছেন। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় নগরীর কাজলশাহ এলাকায় ওসমানী মেডিকেলের ইমার্জেন্সি গেইটের সামনে অবস্থিত রিংকি ফার্মেসিতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। আহতরা হচ্ছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইমরান আহমদ কারিগরি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ও বর্ণি গ্রামের বাসিন্দা কামাল আহমদ, কলেজের প্রভাষক একই গ্রামের বশিরুল ইসলাম সোহেল, একই গ্রামের কামাল উদ্দিন, মহিষখেড় গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় খাগাইল বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী দিলদার হোসেন, গৌরীনগর গ্রামের বাসিন্দা রুবেল আহমদ, একই গ্রামের আশরাফ উদ্দিন এবং সিএনজি অটোরিকশা চালক আকবর আলী। প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহতরা  জানিয়েছেন, রোববার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ সিলেট সড়কে ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে মারাত্মক আহত ইমরান আহমদ কারিগরি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র বর্ণি গ্রামের নোমান আহমদ এবং অন্য আহতদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল কামাল আহমদ ও প্রভাষক বশিরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা। কর্তব্যরত ডাক্তাররা রোগীর সাথে থাকা আকবর আলী নামের এক অটোরিকশা চালককে একটি স্লিপ দিয়ে ওষুধ নিয়ে আসতে বলেন। তিনি ওষুধ আনতে বের হলে এক দালাল তার পিছু নেয়। টাকা বাকি রেখে ওষুধ আনার প্রলোভন দেখিয়ে আকবর আলীকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেইট সংলগ্ন রিংকি ফার্মেসিতে নিয় যায় ওই দালাল। ফার্মেসির মালিক ছালেহ আহমদ স্লিপটি হাতে নিয়ে কর্মচারীদের ওষুধ দেবার নির্দেশ দেন। কর্মচারীরা ওষুধ ব্যাগে ভরে হাসপাতালের স্লিপটি রেখে দেন। ওষুধের মূল্য ৯ হাজার বলে জানান। কিন্তু বাস্তবে ওই ওষুধের মূল্য হচ্ছে সাড়ে ৪শ টাকা। আকবর আলী ওষুধ নিয়ে হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার স্লিপটি দিতে বলেন। তখন ইমরান আহমদ কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল কামাল হোসেন, প্রভাষক বশিরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা ওষুধগুলো নিয়ে রিংকি ফার্মেসিতে ফেরত যান। রোগীর আত্মীয় ও কোম্পানীগঞ্জের খাগাইল বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী দিলদার হোসেন ওষুধগুলো রিংকি ফার্মেসির মালিক ছালেহ আহমদকে দেখিয়ে দাম জিজ্ঞেস করেন। তখন ছালেহ আহমদ ওষুধের মূল্য ৯ হাজার টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে রিংকি ফার্মেসির মালিক ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর এলাকার বাসিন্দা ছালেহ আহমদ, নগরীর বাগবাড়ি এলাকার সন্ত্রাসী পাখি সোহেলের ভাই ফামের্সির ম্যানেজার সুমন আহমদসহ দোকানের কর্মচারি এবং ১০-১৫ জন দালাল রোগীর স্বজনদের ওপর হামলা চালায়। ফার্মেসি মালিক ছলেহ আহমদ ও ম্যানেজার সুমন এবং দালালরা আধঘন্টারও অধিক সময় ধরে তাদের হাতে থাকা কাঁচি, লাঠিসোটা, রড ও স্টিলের পাইপ দিয়ে বেধড়কভাবে তাদেরকে মারধর করে। এতে কলেজের শিক্ষকসহ ৭ জন আহত হন। এরমধ্যে কলেজের প্রভাষক বশিরুল ইসলাম, দিলদার হোসেন এবং আশরাফের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পরপরই সাটার লাগিয়ে পালিয়ে যায় রিংকি ফার্মেসির মালিক সালেহ আহমদ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী-দালালরা। ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিঞা তার ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে আহতরা ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় ইমরান আহমদ কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা জানান, ঘটনার সংবাদ শুনেই আমি আমার ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।