বাংলাদেশী সংস্কৃতি নিয়ে নাদিয়া হোসেনের উপলব্ধি

বাংলাদেশী সংস্কৃতির কিছু বিষয় নিয়ে বাস্তবেই সংগ্রাম করার কথা স্বীকার করলেন ‘গ্রেট বৃটিশ বেক অফ’ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া হোসেন। বাংলাদেশের স্ত্রীরা তার স্বামীর নাম উচ্চারণ করতে পারেন না- অনেক স্থানে এমন সংস্কৃতির প্রচলন আছে। এছাড়া একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে তাকে ‘অসুস্থ’ বলে অভিহিত করার প্রচলনও আছে। কিন্তু এখানে ‘সেক্স’-কে বুঝানোর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো শব্দ নেই বলেও তিনি মনে করেন। এসব নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন নাদিয়া হোসেন। তিনি কথা বলেছেন, তার ‘হ্যাপি প্লেস’ পডকাস্টে ফেয়ার্ন কটনের সঙ্গে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। তাতে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে একজন স্ত্রী তার স্বামীর নাম উচ্চারণ করতে পারেন না। কারণ, তিনি একজন পুরুষ। তার ভাষায়, যদি আমি পরিবারের সদস্যবেষ্টিত থাকি, তাহলে আমার স্বামী আবদালের নাম বুঝাতে বলতে হয়, আমার ছেলেমেয়ের পিতা। তাকে আমার বলতে হয় মুসার পিতা অথবা মরিয়মের পিতা। নিজের তিন সন্তানের দু’জন মুসা ও মরিয়মের নাম উল্লেখ করে এ কথা বলেন নাদিয়া। বলেন, এভাবেই বোঝাতে হয় তিনি আমার সন্তানের পিতা। কিন্তু তার নাম উচ্চারণ করতে পারতাম না। ৩৫ বছর বয়সী নাদিয়া আরো বলেন, তিনি তার স্বামীকে নিজের পিতার সামনে নাম ধরে ডাকেন, যেন তার পিতা তাতে আপ্লুত হন। তার ভাষায়, এমন কোনো পরিবারের নারী সদস্যকে আমি চিনি না, যিনি তার স্বামীর নাম ধরে ডাকেন। তবে আমি আমার বোনদের সামনে নিজের স্বামীকে আবদাল হিসেবে অভিহিত করি। কিন্তু নানী বা দাদীর সামনে এমনটা কখনো করি না। যদি স্বামীর নাম উচ্চারণ করা হয় তাহলে সে ঘটনায় নিজের জীবননাশের আশঙ্কা থাকে। এই ধারণা খুব বেশি বদ্ধমূল। যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন তার আরো একটি জটিল দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ শেফ নাদিয়া। তিনি বলেন, আপনি কি জানেন একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন এটা বোঝানোর জন্য প্রকৃত কোনো শব্দ নেই। এটাকে বোঝাতে আপনাকে বলতে হয়- তিনি অসুস্থ। তিনি অন্তঃসত্ত্বা এটা প্রকৃতপক্ষে এই শব্দটা উচ্চারণ করতে পারেন না। কারণ, এটার অর্থ হলো এমনটা স্বীকার করে নেয়া যে, অন্তঃসত্ত্বা হতে তাকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে হয়েছে কারো সঙ্গে। তাই এসব বিষয়ে যদি আলোচনা করা না হয় তাহলে মানুষ জানতে পারবে না বলে মনে করেন নাদিয়া।