সেতিয়েনের ‘গরু’ থেকে কোম্যানের ‘ষাঁড়’

কিকে সেতিয়েন বার্সেলোনার কোচ হওয়ার পর তার গরুর খামার নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। তার অধীনে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের পর ভক্তরা বলতে ছাড়েননি, মেসিদের গরু বানিয়ে দিয়েছেন সেতিয়েন। তবে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের ছোঁয়ায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। একই দল নিয়ে মৌসুমের প্রথম দুই লীগ ম্যাচে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে বার্সেলোনা। মাত্র ৪৪ দিনের ব্যবধানে ‘গরু’ থেকে ‘ষাঁড়’ হয়ে গেলেন মেসিরা! কীভাবে সম্ভব হলো এই পরিবর্তন? স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার বিশ্লেষণে উঠে এসেছে সেটি। ফিটনেস ডাচ কোচ কোম্যান খেলোয়াড়দের ফিটনেসে খুব জোর দেন। প্রাক মৌসুমে তিনি প্লেয়ারদের ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। বার্সা ডিফেন্ডার সার্জি রবার্তো বলেন, ‘বায়ার্ন ম্যাচের পর (যে ম্যাচে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয় বার্সেলোনা) আমরা বুঝতে পারি আমাদের যথাযথ প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল। তাই প্রাক-মৌসুমে ফিটনেস নিয়ে আমরা ভালোভাবে কাজ করেছি।’ ফল দেখা গেছে প্রথম দুই ম্যাচের স্কোরলাইনে। ভিয়ারিয়ালকে ৪-০ ও সেল্টা ভিগোকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে নতুন দিনের বার্তা দিয়েছে বার্সেলোনা। রক্ষণভাগের নিবেদন রক্ষণভাগই মূল সমস্যা বার্সেলোনার। তবে কোম্যানের অধীনে রক্ষণের নিবেদন বেড়েছে। প্রথম দুটি ম্যাচে ক্লিনশিট রাখাই এর প্রমাণ। যদিও অনেক ক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন দলটির, কিন্তু নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো লক্ষণ। জর্ডি আলবাকে নিয়ে গত মৌসুমে কম সমলোচনা হয়নি। নতুন মৌসুমে শুরুটা দরুণ হয়েছে এই স্প্যানিয়ার্ডের। রক্ষণের সঙ্গে আক্রমণভাগেও দেখা মিলেছে আগের জার্ডি আলবার। ডাবল পিভট ডাচ মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ংকে নিয়ে অনেক প্রত্যাশা বার্সা ভক্তদের। সেটি বোধ হয় পূরণ হতে যাচ্ছে। বার্সেলোনাকে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলাচ্ছেন কোম্যান। যেখানে দুজন হোল্ডিং মিডফিল্ডার রাখা হয়েছে। চমৎকারভাবে এই ফরমেশনে মানিয়ে নিয়েছেন সার্জিও বুসকেটস ও ডি ইয়ং। আনসু ফাতি বার্সার নতুন সেনসেশন। দুই ম্যাচেই করে ফেলেছেন তিন গোল। লিওনেল মেসির সঙ্গে তার রসায়নটা জমে উঠেছে বেশ। বলা হচ্ছে ১৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ড হবেন চলতি মৌসুমে বার্সার তুরুপের তাস। ফিলিপে কুটিনহোর ভূমিকা রেকর্ড দামে কেনা এ ব্রাজিলিয়ানকে এতদিন ব্যবহারই করতে পারেনি বার্সেলোনা। এর প্রধান কারণ ছিল, মাঠে কুটিনহোর বিশেষ কোনো ভূমিকা না থাকা। কিন্তু ৪-২-৩-১ ফরমেশনে তিনি প্লেমেকারের ভূমিকায় ফিরেছেন। মাঠে এখন তার একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচে কুটিনহোও দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। ফলস নাইনে মেসি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি না হওয়া পর্যন্ত মেসির সক্ষমতা ভালোভাবে বুঝা যাবে না। তবে অন্তত কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো তার হাসি ফিরিয়ে দিতে পারে। মেসিকে ফলস নাইনে ব্যবহার করছেন কোম্যান। যে ভূমিকায় সবচেয়ে সফল তিনি। মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই গোলের দেখা পান মেসি। দ্বিতীয় ম্যাচে বার্সার ৪ গোলের দুটিতে তার অবদান। মেসি-ফাতি-কুটিনহোদের এই রসায়ন ভালোভাবে জমে উঠলে নিঃসন্দেহে আবার শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পাবে বার্সেলোনা। এই প্রত্যাশা রেখে আজ লা লিগার তৃতীয় ম্যাচে সেভিয়ার মুখোমুখি হবে কাতালানরা।