জগন্নাথপুরে কণ্যা সন্তান জন্ম দিয়ে পালিয়ে গেলেন মা!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নবজাতক ভূমিষ্ট হওয়া এক কন্যা শিশুকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে শিশুটির মা ও নানি। মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শনিবার সন্ধ্যায় রাশিয়া বেগম (৫০) নামের এক মহিলা নবজাতক শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়ির উপর দেখতে পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান এবং শিশুটিকে লালন পালন করছেন। জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে সাদিয়া বেগম (১৬) এক কিশোরীকে তাঁর মা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে এসে জানান ২-৩দিন যাবৎ তাঁহার মেয়ের পায়খানা না হওয়ায় পেট ফুলে যায়। তখন কর্মরত চিকিৎসক ওই কিশোরীকে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কর্মরত নার্স দেখতে পায় মেয়েটি গর্ভবতী এবং সন্তান ভূমিষ্ট হতে যাচ্ছে। এই খবর শুনার পর কিশোরীর মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিছুক্ষণ পরে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানটিকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে নবজাতক শিশুটির মা ও নানি সন্ধ্যার পর শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়ির উপর রেখে পালিয়ে যায়। পরে রাশিয়া বেগম (৫০) নামের এক মহিলা নবজাতক শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়ির উপর দেখতে পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। পালিয়ে যাওয়া তাঁরা উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের ফারুক মিয়ার পরিচয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। কিন্তু তাদের দেওয়া তথ্য মতে খোঁজ নিয়ে কোন সন্ধান মিলেনি। রাশিয়া বেগম বলেন, এশার আযানের সময় আমি শিশুটিকে সিঁড়ির উপর দেখতে পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন আমি শিশুটির যন্ত করছি। রাশিয়া বেগম ৪দিন আগে তাঁহার নাতিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: শারমিন আরা আশা জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারি হয়। শিশুটি ভর্তি রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছিল। কোন এক সুযোগে শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় শিশুটির অভিভাবকরা। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বিষয়টি জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। পুলিশ এখনো আমাদেরকে কোন সন্ধান দিতে পারেনি। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে লালন-পালন করা হচ্ছে। শিশুটি সুস্থ রয়েছে। কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হাশিম জানান, বালিকান্দি গ্রামে খোঁজ করে তাদের কোন অসিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। মনে হয় হাসপাতালে ভুল তথ্য দিয়ে ভর্তি হয়েছে। জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিশুটির বাবা-মায়ের পরিচয় শনাক্তে কাজ করছি। এখানো সন্ধান পাওয়া যায়নি।