নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে ৮৮টি ও পৌরসভায় ৮টি মিলে ৯৬টি পূজার মন্ডপে বছর ঘুরে আবারো সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে জোরেশোরে শুরু হয়েছে। আনন্দময়ীর আগমনে ধনী-গরিব আবালবৃদ্ধ সকল পুজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে যেন আনন্দের কমতি নেই কোন অংশেই। আর কদিন পরেই বাঙ্গালী হিন্দুদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজার আগমনী শোর সকলের মাঝে বিরাজ করছে। প্রতিটি পুজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পন্ন করার জন্য দিনরাত নিরবিছিন্নভাবে কাজ করছেন প্রতিমা তৈরীর কাজে নিয়োজিত মৃৎ শিল্পীরা। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করে রং তুলির আছড়ে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তারপর মন্ডপ সাজসজ্জার কাজ শেষ করলেই উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেন সবাই। তাই শারদীয় এ দুর্গা পুজাকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ জেলাসহ সবকটি উপজেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল পুজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে বিপুল আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা এবং শহরজুড়ে সাজ সাজ রব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা ঘাটতি নেই বিভিন্ন সংগঠন ও সামাজিক লোকজনের মাঝেও। এ আনন্দকে আরো পরিপূর্ন করে তোলতে প্রতিমা কারিগরগন দিনরাত কাজ করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পুজা শুরুর আগেই শেষ করতে হবে তাদের কাজ । মুর্তির কাজ শেষ করেই রংতুলির আছড়ে শেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।
শাস্ত্রমতে জানাযায়, এ বছর দেবী ঘোটকে আগমন এবং গোটকে গমন করবেন। সমাজের সকল আসুরিক শক্তির বিনাশ সাধন করে সর্বত্র শান্তি স্থাপনের মুলমন্ত্রই হলো শারদীয় দুর্গাপুজার মুল উদ্দেশ্য। সারা দেশের ন্যায় এ বছর নবীগঞ্জ ১৩টি ইউনিয়নে ৮৮টি এবং পৌরসভায় ৮টি মন্ডপে সাড়ম্বরে পূজা অনুষ্টিত হবে। প্রত্যেক পূজা মন্ডপের সেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজায় যথাযথভাবে শান্তি শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা বজার রাখতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নিয়েছেন।বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নবীগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা বলেন,আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে সম্পাদনের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করি।বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক উত্তম কুমার পাল হিমেল বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার ৯৬টি পূজা মন্ডপে সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা সাড়ম্বরে পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিছু ঝুকিপূর্ন মন্ডপসহ সবকটি মন্ডপেই ইতিমধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদারের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে সম্পাদনের জন্য প্রশাসনসহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করি।নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান বলেন,হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালনের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই পুজা সুষ্টভাবে পালন উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন গত সোমবার উপজেলায় বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভার আয়োজন করেছি ।
নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম বলেন,হিন্দু ধর্মবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালনে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। ধর্ম যার যার উৎসবের আনন্দ সবার এই শ্লোগানে আমরা সবাই উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করব।
নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনয়াজ মিলাদ বলেন,হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ব্যাপক প্রশাসনিক ব্যবস্থ্যা হাতে নিয়েছেন। উৎসব উপলক্ষ্যে এদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সকলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকবে বলে আমি আশা করি।
আগামী ৪ঠা অক্টোবর সোমবার ষষ্ঠীপুজার মধ্য দিয়ে নবীগঞ্জের সকল পুজা মন্ডগুলোতে ৫ দিন ব্যাপী শারদীয় দূর্গাপুজা শুরু হবে এবং শুক্রবার মহা বিজয়া দশমীবিহিত পুজার মাধ্যমে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পুজা সম্পন্ন হবে। এ পূজাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ন্যায় নবীগঞ্জের সকল পুজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে সর্বত্র যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করেছে।
মন্তব্য