নন্দিত ডেস্ক:হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন পুরো ধমে জমে উঠেছে। ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট মাসুম আহমেদ জাবেদ আলীর মৃত্যুজনিত কারণে আগামী ১৪ অক্টোবর দেবপাড়া ইউনিয়নে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় করছেন। এই ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মাইকিং,প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে মুখরিত ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকা। ব্যানার পেস্টুনে ছেয়ে গেছে ইউনিয়নের সড়কসহ বিভিন্ন হাট-বাজার।
নির্বাচনে প্রার্থীরা হলেন, দেবপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আ. ক. ম. ফখরুল ইসলাম কালাম (আনারস), আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মুহিত চৌধুরী (নৌকা), সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান এডঃ মাসুম আহমেদ জাবেদ আলীর পুত্র যুবলীগ নেতা শাহ্ রিয়াজ নাদির সুমন (চশমা), ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জালাল আহমদ (ঘোড়া), মাওলানা ফখরুল ইসলাম চৌধুরী (মোটর সাইকেল)।
১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য উপ-নির্বাচনকে ঘিরে চেয়ারম্যান পদে উল্লেখিত ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে বিজয়ের লক্ষ্যে হাট-বাজার সহ গ্রামাঞ্চলে ভোটারদের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন। ইউনিয়নবাসীর সেবা করার জন্য সর্বস্থরের জনসাধারণের কাছে দোয়া ও আর্শিবাদ চেয়ে ভোটারদের সাথে কুশল-বিনিময় করছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৮৩৫০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯০৬৫ জন ও মহিলা ভোটার ৯২৪৩ জন।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আ.ক.ম ফখরুল ইসলাম কালাম (আনারস) ৯৩-৯৪ সালে হবিগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ন পদক লাভ করেন। এবং তিনি একটানা ১৯৮৪-২০১১ সাল পর্যন্ত ৪ বারের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছি, নির্বাচন বানচালে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে,শত ষড়যন্ত্রের পরও ভোটার যদি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে আমি আশা করি বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হবো।
পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে এবং তাঁর ইমেজকে কাজে লাগিয়ে পুরো ধমে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সালিশ-বিচারক এডভোকেট মাসুম আহমেদ জাবেদ আলীর পুত্র শাহ্ রিয়াজ নাদির সুমন(চশমা) । প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন তরুণ উদীয়মান এই প্রার্থী। সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান পুত্র বলেন, বিগত দিনে এই দেবপাড়া ইউনিয়নের সর্বসাধারণ যেভাবে আমার বাবাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছিলেন আমি আশাবাদী আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে ভোটাগণ আমাকে নির্বাচিত করবে। তিনি বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন বিভিন্ন হাট-বাজারে জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল,রাতের আধারে ভোট টেবিল কাস্ট করবে এসব বলে বেড়াচ্ছে। এর ফলে জনমনে আতংক সৃষ্টি করছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মুহিত চৌধুরী (নৌকা) প্রতিদিনই জনগণের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আমি আশাবাদী জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। অপর প্রার্থীদের অভিযোগের প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট,এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই,নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবাধ,নিরপেক্ষ ও শান্তি পূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা এডভোকেট জালাল আহমদ(ঘোড়া) বর্তমান সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতা,অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় গন সংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি নেতা এডভোকেট জালাল আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থিত লোকজন জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল করবে বলে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে । সে অর্থে নির্বাচন সুষ্ট হবে কী না এ নিয়ে আশংকা থেকেই যায়। যদি অবাধ,নিরপেক্ষ ও শান্তি পূর্ণ ভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আমি শতভাগ আশাবাদী জনসাধারণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বর্তমান অবৈধ সরকারের জুলুম,নির্যাতন,অন্যায় -অবিচারের জবাব দিবে এবং আমাকে বিজয়ী করবে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা ফখরুল ইসলাম (মোটর-সাইকেল) তার ক্লীন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বিতরণীতে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টায় ভোটারদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করছেন। ভোটাররা এখন প্রার্থীদের অতীত কর্মকা-সহ তাদের যোগ্যতার চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন। তিনি বলেন তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আমি আশাবাদী আমি বিজয়ী হবো। উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বুধবার সকালে দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এড. মাসুম আহমেদ জাবেদ (জাবিদ আলী) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শুন্য করে তফসিল ঘোষনা করে।
মন্তব্য