কবি লাভলী চৌধুরী আর নেই


সিলেটের বিশিষ্ট কবি ও গল্পকার লাভলী চৌধুরী আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।)

শনিবার নগরীর বেসরকারী একটি ক্লিনিকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিল লাভলী চৌধুরী। নন্দিত এই বর্ষিয়ান কবির নামেই নামকরন করা হয়েছে তার নিজ এলাকা সিলেটের লাভলী রোডের।

মরহুমের নামাযে জানাজা আজ বাদ এশা দরগা হযরত শাহজালাল (রহঃ) এর মাজার মসজিদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি ষাট দশকের একজন জনপ্রিয় কবি ও কথাশিল্পী। সিলেটের সুবিদবাজার এলাকার ‘লাভলী রোড’-এর নামকরণ তাঁরই নামেই।

লাভলী চৌধুরীর জন্ম ১৯৫০ সালের ১১ মে। তাঁর পিতা মরহুম লফিতফুর রহমান চৌধুরীও ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। মাতা মরহুমা সিতারা বেগমও ছিলেন একজন সুসাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। লাভলী চৌধুরীকে শুধুমাত্র ‘সিলেটের কবি’ বলার তো অবকাশই নেই বরং ষাট দশক থেকেই তাঁর পরিচিতি ও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল উভয় বাংলাতেই। ১৯৬৮ সালে ‘শিখা’ নামে একটি সাহিত্যপত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে সম্পাদক হিসেবে অভিষেক ঘটে লাভলী চৌধুরীর।

গল্প লেখার মাধ্যমে সাহিত্যাঙ্গনে প্রবেশ করলেও লাভলী চৌধুরী কবি হিসেবেই অধিক পরিচিত। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের গীতিকার, নাট্যকার ও কথক। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে উপন্যাস-‘ভালো থেকো’ (রচনাকাল ১৯৬৬।। প্রকাশকাল ১৯৮৭), ‘চোখের জলে অন্ধ আঁখি’, ‘স্মৃতিরা পোহায় রোদ্দুর’, ‘সহেনা যাতনা’, ‘তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো’। কাব্য- ‘পুষ্পিতা’, ‘আনন্দ কারাগার’, ‘গীতিগুচ্ছ’, ‘যখন একা বসে থাকি’। জীবনী-‘ত্রিশ বছর পর’, ‘মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও তাঁর গীতি কবিতা’। ছোটোগল্প-‘আকাশ প্রদীপ’। কিশোর উপনাস-‘ইমু ও পাগলা হাতি’।

বরেণ্য এই কবির জীবন ও কর্ম নিয়ে নব্বুই দশকের সূচনাতেই সিলেটের একটি দৈনিকে সর্বপ্রথম আলোচনা করেছিলেন কবি কামাল তৈয়ব।

সিলেট লেখিকা সংঘ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লাভলী চৌধুরী সিলেটের নারী জাগরণ ও লেখিকাদের সংগঠিত করেছেন। নতুন নতুন লেখিকা তৈরিতে তাঁর ভূমিকা অসামান্য। তিনি ছিলেন একজন সফল সংগঠকও।