হবিগঞ্জের চুনারুঘাট দেউন্দি চা বাগানে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় এক মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ইউপি সদস্য, নারী চা শ্রমিকসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশি হয়রানি এবং গ্রেপ্তারের ভয়ে প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে দেউন্দি চা বাগান।
সরেজমিনে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। তবে সংবাদকর্মী পরিচয় জানতে পেরে এ বিষয়ে অধিকাংশ ব্যক্তিই কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার করার শর্তে এক যুবক বলেন, তারা মাদকের বিরুদ্ধে। কোনো ক্রমেই পুলিশের ওপর হামলা করা ঠিক হয়নি। পুলিশের মামলার পর থেকে ভয়ে দেউন্দি চা বাগানের পুরুষেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় যেন নিরীহ চা শ্রমিক হয়রানির শিকার না হয় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান।
পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদ আলী বলেন, ঘটনার পর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যসহ ১৮ জনকে পুলিশ আটক করেছে। কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় চুনারুঘাট থানা পুলিশ দেউন্দি চা বাগানের মাঝল্যানে এলাকায় মাদক পাচারের তথ্য পেয়ে ড্রামভর্তি চোলাই মদসহ সন্তোষ নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করে। তাঁকে অটোরিকশায় করে থানায় নিয়ে আসার পথে একদল মাদক কারবারি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় বাগানের চা শ্রমিকেরা ‘পাগলা ঘণ্টি’ বাজালে শত শত নারী-পুরুষ পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
ওই হামলায় চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তরিকুল ইসলাম, কনস্টেবল জুয়েল, ইমরান, লিটন, নির্মল আহত হন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলা দায়ের করেন।
চুনারুঘাট থানার তদন্ত কর্মকর্তা চম্পক দাম বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ নম্বর পাইকপাড়া ইউনিয়নের দেউন্দি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কার্তিক চন্দ্র বাকতিসহ (৫১) ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পলিয়ে বেড়ালে ধরে নিতে হবে সে অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমরা কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করব না। সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
মন্তব্য