দেশের জনগণের কষ্ট লাঘবে স্বস্তিদায়ক বাজেট নিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন বাজেটে চাপ সামলানোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামী ৯ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বুধবার অর্থনৈতিকবিষয়ক ও ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনগণের যাতে ভোগান্তি না বাড়ে, তাদের ওপর যাতে কোনো চাপ সৃষ্টি না হয়, সেভাবেই আগামী অর্থবছরের বাজেট সাজানো এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।’ জনগণের জীবনযাত্রা সম্প্রতি অনেক বেড়েছে, মানুষ কষ্টে আছে, এমন প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাজেটে করের বোঝা লাঘবে কোনো পদক্ষেপ থাকবে কি না -জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটের আকার কেমন হতে পারে, এর কাঠামো কী হবে, এসব বিষয়ে বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা করেছি। কিন্তু শুল্ক ও কর ছাড় বিষয় নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এসব বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আমাদের আরও বসতে হবে।’ ‘তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আমরা ট্যাক্সের বিষয়গুলো ঠিক করব। তবে নিশ্চয়ই এমন কিছু করা হবে না, যাতে সাধারণ জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। চাপ সামলানোর জন্য যা কিছু দরকার আমরা আগামী বাজেটে তাই করব।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আসন্ন বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। যা হবে জিডিপির ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনার পর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ফলে আগামী বছর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বেগবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে নতুন বাজেটে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রাক্কলন করা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
নতুন বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভর্তুকি চাপ সামলানো। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে সার, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে তাতে করে দেশীয় বাজারে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নতুন বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ অনেক বেড়ে যেতে পারে। সে জন্য নতুন বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দ প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এটি এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ বলে জানা গেছে। চলতি বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
নতুন বাজেট কেমন হতে পারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বাজেটের বিষয়ে গণমাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় সব তথ্যই প্রকাশিত হয়েছে। এখন আমরা কোন খাতে কত বরাদ্দ হবে এবং কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে সেসব বিষয় চূড়ান্ত করব সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে।’ ‘এটাকে আরও কীভাবে স্বচ্ছ করা যায় সে জন্য কাজ চলছে। আশা করছি, নতুন বাজেটে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে।’
মন্তব্য