পরকীয়ার অপবাদে পিরের চুল কেটে দিলেন আ.লীগ নেতা

পরকীয়ার অপবাদে পিরের চুল কেটে দিলেন আ.লীগ নেতা

পরকীয়ার অভিযোগে বগুড়ার শেরপুরে হাফিজুর রহমান (৩৮) নামের এক পিরের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ সময় পিরের কাছে থাকা নগদ টাকা, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেন তারা। গতকাল বুধবার (২২ জুন) উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনায় জড়িতরা প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। পাশাপাশি ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয় বলেও জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পির হাফিজুর রহমানের বাড়ি লালমনিরহাট জেলায়। তার বাবার নাম ডাক্তার আব্দুল হাকিম। বর্তমানে শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের একটি বাড়িতে আস্তানা গড়েন। মঙ্গলবার (২১ জুন) রাতে তার ভাগনে হামছায়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে নওদাপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। এরপর সেখানেই রাত্রিযাপন করেন তিনি।

পরদিন সকালে হাফিজুর রহমানকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগী মিস্টার, আনোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন, নয়ন হোসেন ও রায়হান হোসেন। সেইসঙ্গে বাড়ির মালিক সাইফুলের স্ত্রী কোহিনুর বেগমের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে হাফিজুর রহমানকে মারধর করতে থাকেন তারা। তাকে সাদা কাগজে সই করতে হয়।

এতে রাজি না হওয়ায় হাফিজুর রহমানের চুল কেটে দেন রবিউল ও তার সহযোগীরা। এ সময় তার কাছে থাকা নগদ ৩৫ হাজার টাকা, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেন। পাশাপাশি তাকে দ্রুত এলাকা ছাড়তে বলা হয়। পরে তারা চলে যান।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান বলেন, কোহিনুর সম্পর্কে আমার ভাগনি। তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। অথচ ওই গ্রামের কয়েকজন যুবক আমাকে সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন। এমনকী তাদের কথামতো সাদা কাগজে সই দিতে রাজি না হওয়ায় আমার চুল কেটে দেন। এ সময় আমার কাছে থাকা নগদ টাকাসহ মালামালও ছিনিয়ে নেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তার ভাগনি কোহিনুর বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তার স্বামী স্বামী সাইফুল ইসলাম বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার মামা শ্বশুরকে মারধর করা হয়েছে। তার চুল কেটে দিয়ে সম্মানহানি করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তির চুল কেটে দেইনি। পরকীয়ার কারণে কোহিনুর বেগমের স্বামী সাইফুল ইসলাম নিজেই ওই ব্যক্তিকে মারধরসহ তার চুল কেটে দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।