‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল কক্সবাজার হবে বিশ্বের পর্যটন রাজধানী’

বিশ্বের দরবারে কক্সবাজারকে তুলে ধরতে ৭ দিনের কর্মসূচি নিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হয়েছে। 

দিবসটি উপলক্ষে পর্যটন শিল্পের বিকাশে পর্যটকবান্ধব এই প্রতিপাদ্যে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পর্যটন এলাকার লাবনী পয়েন্ট থেকে বর্ণাঢ্য র্যা লি বের হয়ে পর্যটক নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়। 

এ সময় বিশ্ব পর্যটন দিবসের বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের  উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ। 

পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পর্যটন শিল্প নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন এখনো পুরোপুরিভাবে পূরণ হয়নি। যে কারণে আগের চেয়ে বিদেশি পর্যটকের আগমন বর্তমানে কমেছে। তবে বর্তমান সরকার পর্যটন নিয়ে যে প্রকল্প ও প্রস্তুতি শুরু করেছে তার বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াবে। তাই বিদেশি পর্যটকের আগমন নিশ্চিত করতে সরকার কিংবা প্রশাসনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িদের এগিয়ে আসতে হবে। 

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল কক্সবাজারকে বিশ্বের পর্যটন রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পর্যটকরা যাতে কক্সবাজারকে নানার বাড়ি, মামার বাড়ি, শশুরবাড়ি মনে করে সেরকম সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধু ও দেশনেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণ হবে। 

কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, আজকের মতো সুন্দর এ আয়োজন কখনো হয়নি। এ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে কক্সবাজারকে পুরো বিশ্ববাসী দেখেছেন। আমরা আগে কোথায় ছিলাম এখন কোথায় আছি! 

মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রকৃতির অপূরন্ত সৌন্দর্যে ঘেরা কক্সবাজার। আমরা শুধু ১২০ কিমি সমুদ্র সৈকত নিয়ে আবদ্ধ থাকলে হবে না। সেন্টমার্টিন, দ্বীপ অঞ্চল মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, মাতারবাড়িতেও অনেক সম্ভাবনাময়ী জায়গা রয়েছে। সেগুলোকে পর্যটকবান্ধব করতে হবে।

চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, এই কক্সবাজার পৃথিবীর সৌন্দর্যের শহর কেন হবে না? কক্সবাজার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ একটি নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে। কক্সবাজার পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। বিশ্বের সমস্ত পর্যটকরা কক্সবাজার ছুটে আসবে এই আশা ব্যক্ত করছি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবসে কক্সবাজারে ৭ দিনব্যাপী এই মেলাটি পুরো কক্সবাজার জেলাবাসীর। এই দিবসের মাধ্যমে বিশ্ব পর্যায়ে কক্সবাজারে বর্তমান পর্যটন অবকাঠামো, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা তুলে ধরা। ৩৬৫ দিন প্রতিদিনই মেলার মতোই হোক। বছরের ৩৬৫ দিনই পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাই পর্যটকদের সেবা দিক।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান, জাসদ নেতা নাইমুল হক চৌধুরী টুটুল, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল ইসলাম প্রমুখ। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান।  

এদিকে পর্যটন দিবস ঘিরে ৭ দিনের কর্মসূচিতে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী চলবে পর্যটন মেলা। কক্সাবাজার জেলা প্রশাসন এবং বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। 

মেলাতে খাদ্য উৎসব, লাইভ কুকিং শো এবং হোটেল-মোটেলের আবাসনে ৭০ শতাংশ ছাড়সহ নানা লোভনীয় অফার নিয়ে ২৩০টি স্টল স্থাপন করা হয়। সেখানে আচার, শুঁটকি, পিঠাসহ হরেক রকমের আয়োজনের পাশাপাশি রয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে হরেক রকম পণ্যের সমাহার।