অ্যাভাটার-২ নির্মাণে ১৩ বছর, কারণ জানালেন নির্মাতা

ব্লকবাস্টার সিনেমা অ্যাভাটার। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নিয়ে চলচ্চিত্রটি নিউজিল্যান্ডভিত্তিক ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট স্টুডিও ‘ওয়েটা ডিজিটাল’-এ নির্মিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০৯ সালে। এক দশক ধরে বৈশ্বিক বক্স অফিসে আলোড়ন তোলা সিনেমা ছিল এটি। এ সময়ে আয়ের দিক থেকে অ্যাভাটারকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি কেউ।

তখনই ঘোষণা দেওয়া হয় এর সিক্যুয়েল নির্মাণ করা হবে। তবে নতুন এই পর্বের নাম কী হবে? এ নিয়ে ছিল সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা। দীর্ঘ এক যুগ বেশি সময় ধরে সাসপেন্সের পর ডিজনি ঘোষণা করে অ্যাভাটার-২ সিনেমার টাইটেল। এবারের পর্বের নাম দেওয়া হয় ‘দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’। সারা বিশ্বে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর।

মুক্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ছিল ‘অ্যাভাটার : দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো। প্রিমিয়ার শো শেষে পরিচালক জেমস ক্যামেরন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন সিনেমাটি বানাতে ১৩ বছর লাগল?

এর উত্তরে ক্যামেরুন বলেন, ‘গভীর সমুদ্রের মধ্যে সিনেমাটির শুটিং করতে হয়েছে। যার জন্য সমুদ্রের যথাযথ লোকেশন খুঁজতে গিয়ে কয়েক বছর কেটে যায়। পুরো চিত্রনাট্য লিখেও একের পর এক বদলাতে হয়েছে। এ জন্য শুটিংয়ের দিন একের পর এক পেছানো লাগে। সর্বশেষ চতুর্থবার চিত্রনাট্য লিখে তবেই কাজ শুরু করেছিলাম। সিনেমাটির টুকিটাকি নোটই ছিল ১ হাজা ৫০০ পেজের মতো। নির্মাণ করতে পানির নিচে যে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, এটা সিনেমার জন্যই আবিষ্কার করা।

তিনি আরও বলেন, ‘শুটিংয়ে গিয়েও অনেক কিছু শিখতে হয়েছিল কলাকুশলীদের। এর মধ্যে ছিল পানির নিচে এক মিনিটের বেশি সময় নিশ্বাস বন্ধ করে রাখা। এই অনুশীলন করতে কেটে গিয়েছিল মাসের পর মাস। প্রথম দিকে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মুক্তির কথা থাকলেও এই সময়েও সিনেমাটির সিজিআইয়ের (কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজ) কাজ নিয়ে দোটানায় ছিলাম আমি ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যথাযথভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতেই এতো সময় নিয়েছি আমরা।’

এছাড়া প্রিমিয়ার শেষে ক্যামেরন আরও জানান, ‘তবে পরবর্তী সময় আর দেরি হবে না। অ্যাভাটার এর তৃতীয় কিস্তি আসবে ২০২৪ সালে। পরের কিস্তিগুলো ২০২৬ ও ২০২৮ সালে মুক্তি পাবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ‘মার্ভেলস অ্যাভেঞ্জার্স : অ্যান্ডগেম’ এসে সিংহাসনচ্যুত করে অ্যাভাটারকে। কিন্তু সেই তকমা আবার ফিরে পায় অ্যাভাটার। দুটি চলচ্চিত্রের স্বত্বাধিকার ওয়াল্ট ডিজনি। সর্বোচ্চ আয়ের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা আরেক সিনেমা টাইটানিকও এই একই প্রতিষ্ঠানের।

অ্যাভাটারের পটভূমি একদল লোভী মানুষ আর নিরীহ প্যানডোরাবাসির মধ্যে এক অসম কিন্তু সাহসি যুদ্ধ নিয়ে। কাহিনির সূত্রপাত ২১৫৪ সালে, যখন আরডিএ আনঅবটেনিয়ামের খোঁজে প্যানডোরা নামক পৃথিবীর মতো এক গ্রহে গিয়ে মানুষ হাজির হয়। যার আবহাওয়া মানুষের নিশ্বাস উপযোগী নয়।

এই গ্রহের অধিবাসীদের বলা হয় নাভি। নাভিরা তাদের গ্রহে খুব আনন্দেই বসবাস করছিল যতদিন পর্যন্ত না মানুষের অসাধু ইচ্ছা প্রকাশিত না হয়। নাভিদের পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা নাভিদের মতো দেখতে কিছু দেহ তৈরি করলেন, যা কি না যন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।