রাশিয়া তার পরমাণু অস্ত্রগুলোকে বেলারুশ সীমান্তে ন্যাটোর নাকের ডগায় স্থাপন করতে যাচ্ছবেলারুশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বরিস গ্রিজলভ রোববার রাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
তিনি আরও জানান, এ কাজে পুরোপুরি প্রস্তুত রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র ও ন্যাটো সীমান্তবর্তী দেশ বেলারুশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই দুই প্রতিবেশী আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ‘ইউনিয়ন স্টেট’-এর অংশ এবং আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে আলোচনা চলছে।
এ ছাড়া গত বছর রাশিয়াকে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর জন্য বেলারুশিয়ান অঞ্চল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার পর এই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।
বেলারুশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বরিস গ্রিজলভ বেলারুশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রগুলো ‘আমাদের ইউনিয়ন স্টেটের পশ্চিম সীমান্তে স্থানান্তরিত করা হবে এবং এগুলো এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আপত্তি সত্ত্বেও এটি করা হবে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশ অনুসারে অস্ত্র রাখার স্থাপনা বা স্টোরেজ সুবিধা আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে এবং তার পর এসব পারমাণু অস্ত্র বেলারুশের পশ্চিম সীমান্তে স্থানান্তরিত হবে।
বেলারুশের উত্তরে লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া এবং পশ্চিমে পোল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। পূর্ব দিকের সীমান্তে রয়েছে ইউক্রেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও কিয়েভের অন্য মিত্ররা বলেছে, তারা বেলারুশে রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
অবশ্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো গত শুক্রবার বলেছেন, রাশিয়াকে প্রয়োজনে আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনের অনুমতি দেবে বেলারুশ।
অবশ্য ঠিক কবে নাগাদ অস্ত্রগুলো বেলারুশে স্থানান্তর করা হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এ ঘোষণা বাস্তবে রূপ নিলে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করবে রাশিয়া।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। গত ২৮ বছর ধরে তিনি বেলারুশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বেলারুশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থন তাকে ২০২০ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পরও টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল।
মন্তব্য