শাস্তির দাবি জোরালো হচ্ছে: অধ্যাপক ইমতিয়াজ

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জোরালো হচ্ছে। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেয় তারা।


মানববন্ধনে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, নিজের বইয়ে ইমতিয়াজ লিখেছেন- ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিজে হাজির হয়ে বঙ্গবন্ধুকে বক্তব্যের শেষে ‘জয় বাংলা’ বলার পর ‘জয় পাকিস্তান’ বলতে শুনেছেন। বইটিতে এমন কথাও লিখেছেন, যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, ১৯৭১-এ বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে না। অধ্যাপক ইমতিয়াজ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা করে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এদিকে মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ যে অপরাধ করেছেন, সেটা অমার্জনীয়। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইমতিয়াজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে চরমভাবে অবমাননা করেছেন। তার জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে পারে না। গণহত্যা গবেষণা কেন্দতার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।ওদিকে, রোববার রাতে এক বিবৃতিতে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, যে বইটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে সংঘটিত জেনোসাইডের বিচার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়ে রচিত, তাতে ১৯৭১ সালের জেনোসাইডকেই অস্বীকার কিংবা এর গুরুত্ব কমিয়ে দেখানো কীভাবে সম্ভব? প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় আমি আশ্চর্য হয়েছি। আমি মনে করি, কোথাও বইয়ের কোনো কোনো অংশ বুঝতে ভুল হয়েছে কিংবা ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে।

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেছেন, ‘বইয়ের কোথাও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অসম্মান বা অশ্রদ্ধা প্রদর্শন হতে পারে- এমন একটি শব্দও নেই। এমনটি হতে পারে যে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিষয়ে আমার একটি মন্তব্যের সুযোগ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে। তারা হয়ত আমার বক্তব্যের সারবস্তু উপলব্ধি করার চেষ্টা করেননি। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণ কীভাবে শেষ করেছিলেন, সে বিষয়ে একটি বিতর্ক সে সময় চলছিল। আমি বলেছি- তিনি যেভাবেই শেষ করেছেন তা ছিল একজন বিচক্ষণ রাজনীতিকের 'master stroke of a political genius'। আমি এটাও লিখেছি যে ৭ই মার্চ স্বাধীনতার আহ্বান জানানো হয়েছিল এবং ২৬ মার্চ হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। মুজিবনগর সরকার যথার্থভাবেই এ ঘোষণা দিয়েছিল