দিনভর অবরুদ্ধ থাকার পর রুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ

দিনভর অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে রাতে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) রুটিন দায়িত্বের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেরোববার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। 

এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে রুয়েটের অর্ধশতাধিক শিক্ষক তাদের পদোন্নতির দাবিতে রুটিন দায়িত্বের ভিসি অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করেন। ভিসির কার্যালয়ে শিক্ষকেরা মেঝেতে বসে ছিলেন দীর্ঘ সময়। দিনভরই চলছিল আলোচনা। কিন্তু রুটিন দায়িত্বের ভিসি হিসেবে পদোন্নতি দিতে না পারার কারণ বোঝাতে ব্যর্থ হলে রাতে তিনি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের পরই দপ্তর ছেড়ে চলে যান ড. সাজ্জাদ হোসেন। রাত ৯টার পর রুয়েটের প্রশাসনিক ভবন ছিল সুনসান নীরবতা। এর কিছুক্ষণ আগেও এখানে শিক্ষকদের আন্দোলন চলছিল। 

রাতে পদত্যাগের বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন ড. সাজ্জাদ হোসেন। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমি রুটিন দায়িত্বে ভিসি নিযুক্ত হয়েছিলাম। আমরা পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু যারা আন্দোলন করছিলেন, তারা এটা বুঝতে চাননি। তারা মনে করছিলেন যে, আমি থাকার কারণে নিয়মিত ভিসিও নিয়োগ হচ্ছে না। তাই আমি পদত্যাগ করি, এটা তাঁরা চাচ্ছিলেন। এ কারণে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’ 

উপাচার্য আরও বলেন, ‘পদত্যাগপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিমকে দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবেন।’

গত বছরের ৩০ জুলাই আগের ভিসির মেয়াদ শেষ হলে রুয়েটের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক এই পদ শূন্য হয়ে যায়। এরপর ১০ মাস থেকে রুটিন দায়িত্বের অতিরিক্ত ভিসির দায়িত্ব পালন করছিলেন অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ, ১১ মাস ধরে ক্যাম্পাসে ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ ছাড়া সব শর্ত পূরণ করেও গত ১৫ মাসে অন্তত ৮০ জন শিক্ষক তাদের ন্যায্য পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। 

সকালে অর্ধশতাধিক শিক্ষক পদোন্নতির দাবিতে শিক্ষক সমিতির কয়েকজন নেতার সঙ্গে শিক্ষকেরা ভিসির দপ্তরে প্রবেশ করেন। এ সময় রুটিন দায়িত্বের ভিসিকে পদোন্নতির বিষয়টি বললে তার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই বলে জানান। এরপর থেকে থেকেই শিক্ষকেরা ড. সাজ্জাদের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি তাকে তার দপ্তর থেকে বের হতে দিচ্ছিলেন না।