স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে নতুন মেয়র মাবু

প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে নতুন মেয়র হয়েছেন নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান মাবু। বেসরকারি ফলাফলে পৌরসভার ৪৩ কেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ৪১৮। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নারকেল গাছ প্রতীকের মাসেদুল হক রাশেদ পেয়েছেন ২৪ হাজার ৫৭৪ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। অনভ্যস্ততায় সবগুলোতে ইভিএমে ভোট দিতে ভোগান্তি পেয়েছেন নারী ভোটাররা।

সকাল থেকে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে অপেক্ষা করেন বিকাল ৪টা পর্যন্ত। 

নির্বাচনে পাঁচ মেয়র প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াই হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী মাবু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত) মাসেদুল হক রাশেদের।

পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ৯৪ হাজার ৮১১ জন ভোটারের মাঝে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৫৫ হাজার ৩৮১ জন। নির্বাচনে পাঁচ মেয়র প্রার্থীসহ সংরক্ষিত নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর মিলে ৭৮ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে ছিলেন।

ভোটে সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচিতরা হলেন- ১নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আক্তার কামাল আজাদ, ২নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, ৩নং ওয়ার্ডে আমিনুল ইসলাম মুকুল, ৪নং ওয়ার্ডে এহেছান উল্লাহ ৫নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর শাহাব উদ্দীন সিকদার, ৬নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালু, ৭নং ওয়ার্ডে ওসমান সরওয়ার টিপু, ৮নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশ, ৯নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন কবির, ১০নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতু, ১১নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর নূর মোহাম্মদ মাজু এবং ১২নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর এমএ মনজুর।

সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিতরা হলেন- পূর্বের চারজনই। এতে ১, ২, ৩-এ শাহেনা আক্তার পাখি, ৪, ৫, ৬-এ ইয়াসমিন আকতার ৭, ৮, ৯- এ জাহেদা আকতার এবং ১০, ১১, ১২- এ নাছিমা আকতার।

জয়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নৌকার প্রার্থী মাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর আস্থা রেখে নৌকা দিয়েছেন- জনগণ আমাকে বিজয়ী করেছেন। বর্তমান মেয়র মুজিবুর রহমানের শুরু করা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে অব্যাহত রাখব।

ভোটাররা জানান, ইভিএম মেশিনে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আগে অভ্যস্ত ছিলাম না। তাই ভোটগ্রহণ কক্ষে ইভিএমে ভোট দিতে দেরি হয়। অনেক কেন্দ্রে ইভিএমে ত্রুটি ছিল; যা ঠিক করতে সময় লেগেছে। তবে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরে খুশি ভোটাররা।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা জানান, অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্নে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে দুটি করে সিসিটিভি এবং প্রতি বুথে একটি করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সঙ্গে তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ১২টি র‌্যাবের পেট্রল টিম, ৭৯০ জন পুলিশ ও সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় কক্সবাজার পৌরসভায় অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলরত অবস্থায় ছিলেন।কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, বিগত দিনেও কক্সবাজারে ইভিএমে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। এবারো একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছি আমরা।